নেশার টাকা জোগাড় করতেই পবানার ভাঙ্গুড়ার সিকেবি আলিম মাদরাসার নৈশ প্রহরী আব্দুল গনিকে (৫৮) কুপিয়ে হত্যা করে স্থানীয় মাদকাসক্ত দুই কিশোর। এরা হলেন, উপজেলার বৃদ্ধমরিচ গ্রামের জেলহক প্রামানিকের ছেলে হাবিব (১৪) ও চন্ডিপুর গ্রামের আছমত আলীর ছেলে আহম্মাদ আলী (১৬)। আটক ওই দুই কিশোর বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও ছেনি জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে ভাঙ্গুড়া থানায় অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আকতার।
সহকারী পুলিশ সুপার জানান, আব্দুল গনি দীর্ঘদিন ধরে চন্ডিপুর সিকেবি আলিম মাদরাসায় নৈশ প্রহরীর চাকরি করতেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন ও বিয়ে পড়াতেন। তাকে নানা ডাকতেন হাবিব। মাঝেমধ্যে তারা একসঙ্গে রাত্রিযাপন করতেন। মাদরাসার একটি কক্ষেই থাকতেন আব্দুল গনি। তাই গচ্ছিত টাকা-পয়সা নিজের কাছেই রাখতেন তিনি। আর এসব কিছুই জানতেন হাবিব। আর হাবিবের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল আহম্মদ আলীর। দুজনেই মাদকাসক্ত।
সেই সুবাদে ওই বৃদ্ধার গচ্ছিত প্রায় ৩০/৩৫ হাজার টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। সে অনুযায়ী গত সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে চন্ডিপুর খেলার মাঠে বসে তারা নেশা করে এবং সেখানে বসেই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এরপর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে হাবিব ও আহম্মদ আব্দুল গনির থাকার কক্ষে যায়। সেখানে মোবাইল ফোনে তাকে ওয়াজ দেখতে দেয়া হয়। একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে কক্ষের ভিতরে থাকা দা ও ছেনি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এরপর বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে হাবিব নিজেই আব্দুল গনির ছেলে আব্দুল বারিককে মোবাইল ফোনে জানায় যে-তার বাবাকে কে বা কারা কুপিয়ে জখম করেছে। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আব্দুল করিমসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।