খাগড়াছড়িতে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী শাপলা (ছদ্মনাম)। বয়স কেবল ১৫ বছর ৯ মাস। অথচ আগামী ১৬ জুন সোমবার তার বিয়ে এবং রোববার গায়ে হলুদের দিন ধার্য্য ছিলো। সব আয়োজনও সম্পন্ন প্রায়। অতিথিদের দাওয়াতের পালাও ও শেষ। বর ও কনে উভয়ের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর গঞ্জপাড়া এলাকায়। বরের বাড়িতে সাজানো হচ্ছে প্যান্ডেল। বর ইদুল হাসান (২৯) চট্টগ্রামের বারৈয়ারহাটে সবজির ব্যবসা করেন। কনের প্রাপ্ত বয়স না হলেও দুই পরিবার সম্মত হয়েছিল এই বিয়েতে। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায়।
১৩ জুন শুক্রবার দুপুরে গোপন সূত্রে জানতে পেরে তিনি সদর থানা পুলিশের সহায়তায় জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুস্মিতা খীসাকে সঙ্গে নিয়ে উত্তর গঞ্জপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে দেখা যায়, বর ও কনের বাড়ি পাশাপাশি। বিয়ের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। রান্নার সরঞ্জাম এসে গেছে, বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে বিয়ের কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক। জন্মসনদ ঘেঁটে বাল্য বিয়ের প্রস্তুতির সত্যতা পান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
কনে শাপলা জানায়, সে এই বিয়ে করতে চায় না। তার আরও পড়াশুনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ইচ্ছে। বর ও কনের পরিবার নিজেদের ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবে না বলে মুচলেকা দেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বর ও কনের বাবাকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেন।
সুজন চন্দ্র রায় বলেন, 'নিজের অপরাধ স্বীকার করায় প্রাথমিকভাবে উভয় পরিবারকে সতর্ক করে মুচলেকা নেওয়ার পাশাপাশি অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যেন শাপলাকে (ছদ্মনাম) প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে দিতে না পারেন সেজন্য স্থানীয় গণমান্য, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি করা হয়েছে।