বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে দিতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য আমাদের এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
পথহারা বাংলাদেশকে ২৪’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন করে গড়ার সুযোগ হয়েছে। ২হাজার ছাত্র-জনতার শহীদ ও প্রায় ত্রিশ হাজার ছাত্র-জনতার পঙ্গুত্ব বরণের মাধ্যমে নতুন স্বাধীনতা লাভ করা বাংলাদেশে আর যেন কোন শক্তি ফ্যাসিবাদের জন্ম দিতে না পারে, বৈষম্য তৈরী করতে না পারে, অন্যায় অত্যাচার জুলুম নির্যাতন দখলবাজি চাঁদাবজি করতে না পারে সেদিকে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যথায় আমাদের এই ছাত্র-জনতার স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাবে।
পবিত্র হজ্ব পালন শেষে ফুলতলার শিরোমনি বাড়ি ফেরার পথে তিনটি পৃথক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন। ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাষ্টার মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আঃ আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসষ্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমীর ডাঃ সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটোর সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারী মোঃ আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাষ্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, বাইতুলমাল সেক্রেটারী হাফেজ আমিনুল ইসলাম, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মোঃ ইউসুফ ফকির, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সহ সভাপতি মোঃ আলামিন গোলদার, খানজাহান আলী থানা সেক্রেটারী গাজী মোর্শেদ মামুন, ফুলতলা উপজেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, সেক্রেটারী মাওলানা সাইফুল হাসান খাঁন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ মোঃ আলাউদ্দিন, ড. মোঃ আজিজুল হক, মাওলানা জোবায়ের হোসেন ফাহাদ, পেশাজীবি বিভাগের সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারী হাফেজ আলামিন গাজী, দামোদর ইউনিয়ন আমীর ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির আহমদ, সেক্রেটারী মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, জামায়াত নেতা আঃ জলিল শেখ, এএইচএম শফিউল্লাহ হাজেরী, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্খিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলি হত্যা, লুটপাট, দূর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামী শাসন দেখার। তাইতো আমাদের আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রুপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দূর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবেনা, বেকারত্বের অভিশাপ কোন যুবককে বয়ে বেড়াতে হবেনা, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণ রাষ্ট্র দেখতে পাবে।
বিগত ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্র্যন্ত্ এমপি থাকাকালীন সময়ে তার উন্নয়নের বর্ণনা দিয়ে সেক্রেটারী জেনারেল বলেন, আমি এমপি থাকাকালীন সময়ে ফুলতলা-ডুমুরিয়ার সন্ত্রাস নির্মূল ও সুষম উন্নয়ন করা দুটি ওয়াদা ছিলো। আমি তখন জনগণকে সাথে নিয়ে সন্ত্রাসী এই জনপদকে সন্ত্রাসমুক্ত করেছিলাম। ৫ বছরে এই বিশাল এলাকার সব উন্নয়ন করা যায়না। তবুও যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি উন্নয়ন করার যা গত ১৫ বছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।