ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ভয়াবহ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সোমবার (১৬ জুন) দিবাগত রাতে প্রায় নয় ঘণ্টাব্যাপী এই হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে এক মার্কিন নাগরিক রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১১৬ জন। এই ঘটনায় কিয়েভজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক, চলছে উদ্ধার তৎপরতা।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, কিয়েভ ছাড়াও ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ওডেসায় রুশ বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন, যাদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে।
কিয়েভের সামরিক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, রাশিয়া এ হামলায় ব্যবহার করেছে প্রায় ১৭৫টি ড্রোন, ১৪টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এসব হামলা চালানো হয় রাতভর, যা দীর্ঘ সময় ধরে পুরো শহরজুড়ে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
সামরিক বাহিনীর প্রধান তাইমুর তিকাচেঙ্কো জানান, রাশিয়ার ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে কিয়েভের একটি ৯ তলা আবাসিক ভবনে। এতে ভবনটিতে বড়সড় একটি গর্ত সৃষ্টি হয় এবং কমপক্ষে ৩০টি অ্যাপার্টমেন্ট সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগোর ক্লাইমেনকো বলেন, ‘রাতভর বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছিল পুরো কিয়েভ। আমরা এখন পর্যন্ত ২৭টি ভিন্ন স্থানে হামলার চিহ্ন পেয়েছি।’ তিনি আরও জানান, উদ্ধার অভিযানে যুক্ত রয়েছেন দুই হাজারের বেশি কর্মী— যাদের মধ্যে রয়েছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন কর্মী এবং চিকিৎসা সহায়তাকারীরা।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের হামলা শুধু ইউক্রেনের সামরিক কাঠামোর ওপর নয়, বরং সাধারণ নাগরিকদের মনোবল ভাঙার একটি কৌশল হতে পারে। যুদ্ধের দীর্ঘ সময় পর এমন ঘনঘন, ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী হামলা ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধের শক্তি হ্রাস করতে পারে বলে মন্তব্য তাদের।