পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে ২৪ জুনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৫, ০৩:২৫ পিএম
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে ২৪ জুনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান

২০১৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে দেশজুড়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (১৭ জুন) একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিকে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়।

ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ এস এম রুহুল ইমরানের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চিফ প্রসিকিউটরের দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আমলে নিয়েছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি সত্ত্বেও তারা পলাতক রয়েছেন বা গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে আছেন বলেও ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে যুক্তিযুক্ত বিশ্বাস করা হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে তাদের ২৪ জুনের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা আত্মসমর্পণ না করলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই আদেশ দেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, “এই প্রযুক্তির যুগে কেউ জানেন না যে, তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে — এটি এখন আর সাধারণত বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে আইনের সব বিধান অনুসরণ করেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।”

এই মামলার অপর আসামি হলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন এবং সোমবার (১৬ জুন) ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসিকিউশনের অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশব্যাপী শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকসহ প্রায় ১,৪০০ মানুষকে হত্যার দায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়ী। প্রসিকিউশনের দাবি অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি দলীয় সংগঠনের সদস্যরা শেখ হাসিনার ‘সরাসরি নির্দেশ, উসকানি ও প্ররোচনায়’ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। এমনকি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশও নাকি সরাসরি শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।

প্রসিকিউশনের ভাষ্য অনুযায়ী, সেই সময়কার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন এবং বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এই বিষয়ে শেখ হাসিনা কিংবা আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে