কেটলির বদলে শাপলা বা দোয়েল চায় নাগরিক ঐক্য, ইসির না

নিবন্ধনপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দল নাগরিক ঐক্য ‘কেটলি’ প্রতীকের পরিবর্তে শাপলা বা দোয়েল পাখি প্রতীক বরাদ্দের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দুটি প্রতীক জাতীয় প্রতীক হওয়ায় কোনো রাজনৈতিক দলকে তা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হামিদের কাছে আবেদনপত্র জমা দেন নাগরিক ঐক্যের নারী শাখা ‘নারী ঐক্য’-এর সদস্য সচিব ফেরদৌসী আক্তার এবং দলের দপ্তর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ। আবেদনপত্রটি স্বাক্ষর করেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক।

সচিবালয়ের একান্ত সচিব মোখলেছুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, আবেদনকারীদের সঙ্গে সচিব সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের জানিয়ে দেন, শাপলা ও দোয়েল — উভয়ই জাতীয় প্রতীক হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিধিমালায় এগুলো রাজনৈতিক প্রতীক হিসেবে বরাদ্দযোগ্য নয়।

ফেরদৌসী আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, “নাগরিক ঐক্য দলীয় পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক পায়নি। নির্বাচন কমিশন আমাদের ‘কেটলি’ প্রতীক দিয়েছে। আমরা দলীয় পছন্দ অনুযায়ী শাপলা বা দোয়েল পাখি প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছি।”

এ বিষয়ে দলটির দপ্তর সম্পাদক মহিদ বলেন, “নির্বাচন কমিশন সচিব জানিয়েছেন, এই দুটি প্রতীক দেওয়া যাবে না। তবে নতুন প্রতীক তালিকায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকলে অন্য কোনো প্রতীক চেয়ে আমরা পরবর্তীতে নতুন করে আবেদন করতে পারি।”

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১ জুন সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না ‘নাগরিক ঐক্য’ দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। দলটি একাধিকবার আবেদন করেও নিবন্ধন পায়নি। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০২৪ সালে আদালতের আদেশে দলটির নিবন্ধন কার্যকর হয়।

২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে নাগরিক ঐক্যকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং প্রতীক হিসেবে ‘কেটলি’ বরাদ্দ দেয়। কমিশনের দেওয়া নিবন্ধন নম্বর— ৫২।

এদিকে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের প্রতীক পছন্দের তালিকায় শাপলাকে রেখেছে। দলের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, তারা মুষ্টিবদ্ধ হাত, দোয়াত-কলম ও ল্যাপটপসহ আরও কয়েকটি প্রতীক নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব করেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন করে ভাবনা শুরু হয়েছে। অনেক দলই প্রতীক বদলের সুযোগ চায়, তবে জাতীয় প্রতীক ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট।