হাসিনা সরকারের অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের অনেক ভাই অত্যাচার, অবিচার, জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তারা গুম হয়েছে। হারিয়ে গেছে ও হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্য থেকে এক মূহুর্তের জন্যও বিচ্যুত হয় নাই। সেই কারণেই অনেকের অবাক লাগতে পারে। মাত্র দেড় মাসের আন্দোলনে কি করে শেখ হাসিনার মত এক পরাক্রমশালী স্বৈরশাসকের পতন হয়? পতন হয় এই কারণেই এর আগের ১৫ বছর আমার বিএনপি পরিবারের প্রতিটি নেতা কর্মী কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত তাদের সংগ্রাম লড়াই আত্মত্যাগ ও কর্মকান্ড চালিয়ে গেছেন। সেই কারণেই শেখ হাসিনা গত ৫ ই আগষ্ট বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সোমবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সরাইলের ৯টি ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গকে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক দেয়া সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোল্লেখিত কথা গুলো বলেছেন বিএনপি নেত্রী টকশো ব্যক্তিত্ব ও বাঘিনী কন্যা খ্যাত ব্যারিস্টার রূমিন ফারহানা। তিনি বলেন, আমরা নতুন একটি বাংলাদেশে এসেছি। এই নতুন বাংলাদেশ সকলের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ জাতী ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে আমরা ধর্মের জাতী কিংবা অর্থনৈতিক বন্টনের ভিত্তিতে কোন ধরণের বৈষম্য মেনে নিব না। নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশকে আমরা নতুন ভাবে গড়ে তুলব। আল্লাহ যদি রহম করে আপনাদের ভোটে যদি আমি সরাইল ও আশুগঞ্জের এমপি নির্বাচিত হয় তবে আমার কিছু পরিকল্পনা আছে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া বহু জেলায় আমি ঘুরেছি। আমাকে রাজনৈতিক কারণে দলের প্রয়োজনে যেতে হয়েছে। অনেকে মনে করেছেন আমাকে দেখলে দুইটা লোক বেশী আসবে। আর সেই জন্যই আমাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়েছেন। ওইসব এলাকায় আমি দেখেছি রাস্তা ঘাট যথেষ্ট উন্নত। অত্যাধুনিক বিল্ডিং ও সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা। যখন আমি সরাইলের ৯টা ইউনিয়ন ঘুরি তখন খুবই কষ্ট লাগে। কষ্ট হয় আশুগঞ্জের রিমোর্ট এরিয়াতে গেলে। আমি যদি ভোটে আপনাদের এমপি হতে পারি তবে এই সব রাস্তা ঘাটের ব্যাপক পরিবর্তন করব। আমি সংরক্ষিত মহিলা আসনে সাড়ে তিন বছরের জন্য এমপি নির্বাচিত হয়েছিলাম। আমার বরাদ্ধ একজন নির্বাচিত এমপি’র বরাদ্ধের বিশ ভাগের এক ভাগেরও কম। কিন্তু তারপরও আমি সাধ্যমত উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। আমি ছিলাম বিরোধী দলের একজন। আমি একা সংসদে শেখ হাসিনার সকল এমপি’র সাথে লড়াই করতাম। চিৎকার করতাম। আপনারা অবশ্যই সেই চিত্র দেখেছেন। তাই ইচ্ছে করেই আমাকে বরাদ্ধ দিতে চাইত না। তারপরও যতটুকু পেয়েছি আমি বরাদ্ধের প্রতিটি পয়সা সরাইল আশুগঞ্জের উন্নয়নেই ব্যয় করেছি। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প। ইনশাল্লাহ আপনাদের ভোটে যদি আগামীতে আমার দল বিএনপি সরকার ঘটন করেন। আর আমি এমপি হতে পারি, তবে উন্নয়নের দ্বারা সরাইল আশুগঞ্জের চিত্র পাল্টে দেব। সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের সঞ্চালনায় ইউএনও মো. মোশারফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনীরা কায়ছান, অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল হাসান, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর, বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা জামায়াতের সম্পাদক মো. এনাম খান, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা কুতুব উদ্দিন। সবশেষে প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানার্থে তাদের হাতে উপহার তুলে দেন।