প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদী থেকে রোববার জোড়া মৃত কাতলা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে। মাছ দুটি স্থানীয়দের সহযোগিতায় রামদাস মুন্সীর হাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ি উপ- পরিদর্শক রমজান আলী নদী থেকে উদ্ধার করেন। রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর আজাদির সহযোগিতায় মাছ দুটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরীতে পাঠানো হয়। মাছ দুটির একটির দৈর্ঘ্য ৩৮ ইঞ্চি ওজন-১২ কেজি ৮শ ৫০ গ্রাম,অপরটির দৈর্ঘ্য- ৩৬ ইঞ্চি, ওজন- ৮ কেজি ৩ শ ৫০গ্রাম কেজি া
গত বছরও হালদা নদীতে জুন মাসে প্রায় ৭টি ব্রুড মাছের মৃত্যু হয়েছে। সাধারণত ডিম ছাড়ার পর ব্রুড মাছগুলো শারীরবৃত্তীয় ভাবে খুব দূর্বল অবস্থায় থাকে। এই সময়ে নদীর ব্রুড মাছ (প্রজননক্ষম মা-বাবা মছ) এর মৃত্যুর পেছনে এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়া (অবৎড়সড়হধং ংঢ়ঢ়.) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এরোমোনাস সাধারণত সুযোগসন্ধানী (ঙঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরংঃরপ) রোগসৃষ্টিকারী, অর্থাৎ এটি শক্তিশালী, স্বাস্থ্যবান মাছকে সহজে আক্রান্ত করতে পারে না, কিন্তু দুর্বল বা চাপগ্রস্ত মাছকে মারাত্মকভাবে সংক্রমিত করে। বিশেষ করে যখন পানি দূষণ কৃষি বা শিল্প বর্জ্য, জৈব পদার্থের আধিক্য এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি উৎসাহিত করে। ব্রুড মাছ ডিম ছাড়ার সময় শারীরিকভাবে দুর্বল হয় এবং হরমোনজনিত চাপে ভোগে ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
মাছের ডিম ছাড়ার কয়েকদিন পর কোরবানির গরুর চামড়া, নাড়িভুঁড়ি হালদা নদীতে ফেলার ফলে এই ধরনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাছাড়াও কয়েকদিন আগে ব্যাপক বৃষ্টির পানির সাথে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পচে নদীর পানির রং পরিবর্তন করে ফেলেছে। এতে নদীর পানিতে মাত্রা অতিরিক্ত এমোনিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের দূষণকে ইউট্রোফিকেশন বলে।
নদী থেকে সংগৃহীত মৃত ব্রুড মাছগুলোতে এরোমোনাস সংক্রমণের নিম্নোক্ত লক্ষণ সমূহ দেখা যায়।ত্বকে লাল ঘা বা আলসার, পাখনার গোড়া পচা।ফুলকা ফ্যাকাশে বা পচন ধরা।পেট ফোলা বা চোখ ফুলে যাওয়া।
উপরোক্ত তথ্য থেকে হালদা রিভার্স রিচার্স ল্যাবরেটরির সমন্ময়ক অধ্যাপক ড মঞ্জুরুল কিবরিয়া ধারণা করছে বলে গনমাধ্যমকে জানান। এই দূষণের ফলে সুযোগ সন্ধানী এরোমোনাস ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের ফলে ব্রুড মাছগুলোর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।