বাংলাদেশ স্কাউটসের কাব কার্নিভালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্কাউটদের আত্মদান ও আন্তর্জাতিক অবদানকে বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, “জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশ স্কাউট সদস্যদের আত্মাহুতি শুধু দেশের জন্য নয়, বিশ্ব স্কাউটসের ইতিহাসেই এক অনন্য নজির।”
সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি বিজয়ী স্কাউট সদস্যদের হাতে ‘শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড’ এবং জুলাই বিপ্লবে শহীদ হওয়া আট স্কাউট সদস্যের পরিবারের হাতে ‘গ্যালানট্রি অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেন।
নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, “১৯৫৫ সালে কানাডার গ্লোবাল স্কাউট জাম্বুরিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলাম। স্কাউটিং আমার কিশোর বয়সের আদর্শিক পরিচয় হয়ে উঠেছিল। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই আমার স্কাউটিং যাত্রা শুরু হয়, যা থামেনি।”
তিনি বলেন, স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ এবং ভিন দেশের মানুষ সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছিলেন, যা একজন কিশোরের মানসিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এজন্য বর্তমান স্কাউটিং কর্মসূচিতে বিশ্বভ্রমণের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত করার ওপর তিনি জোর দেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “স্কাউটিংয়ে যেন পৃথিবীকে জানার, ভিন দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি শেখার এবং বন্ধুত্ব গড়ার সুযোগ থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। এর মাধ্যমে একেকজন স্কাউট সদস্য নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনাকে আবিষ্কার করতে পারবে।”
তিনি কিশোর বয়সেই বিশ্বকে দেখার অভিজ্ঞতাকে জীবনের জন্য অমূল্য বলে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে স্কাউট প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে ‘শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা। পাশাপাশি ৮ জন শহীদ স্কাউট সদস্যের পরিবারের হাতে ‘গ্যালানট্রি অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দিয়ে তাদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটসের অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক মো. এহছানুল হক এবং সদস্য সচিব মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তারা স্কাউট আন্দোলনের ভবিষ্যৎ ও সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, কাব কার্নিভালটি দেশের মোট ৫২৭টি স্থানে একযোগে শুরু হয়েছে, যা সারাদেশে স্কাউটস কার্যক্রমে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।