সাঁথিয়ায় বৃদ্ধ মাকে মারধর করে তারিয়ে দিল ছেলে

এফএনএস (জালাল উদ্দিন; সাঁথিয়া, পাবনা) : | প্রকাশ: ২৮ জুন, ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
সাঁথিয়ায় বৃদ্ধ মাকে মারধর করে তারিয়ে দিল ছেলে

পাবনার সাঁথিয়ায় বৃদ্ধ মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার একমাত্র ছেলে শাহ আলমের বিরুদ্ধে। সারা শরীরে আঘাতের ছিলাফোলা জখম নিয়ে বৃদ্ধ মা শাহিদা খাতুন(৬৫) সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে শুধু চোখের পানি ঝড়াচ্ছেন।চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গতকাল শুক্রবার(২৭জুন)সন্ধ্যার দিকে তিনি হাসপাতাল থেকে ভ্যানযোগে সাঁথিয়া থানায় এবং সেনা ক্যাম্পে এসে নিজে বাদী হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের চকমধুপুর গ্রামে।শাহিদা খাতুন ওই গ্রামের মৃত মোকছেদ আলম মাস্টারের স্ত্রী। 

থানায় লিখিত অভিযোগে জানা গেছে,বৃদ্ধা শাহিদা খাতুনের স্বামীর ভিটায় তার একটি ঘর আছে। অথচ ছেলে,ছেলের স্ত্রী ও নাতিরা তাকে বাড়িতে থাকতে দিবে না। গত ২৫জুন (বুধবার) রাতে তিনি তার বসতঘরে যেতে লাগলে তার ছেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং ঘরে ঢুকতে বাধা দেন।তরা সবাই মিলে শাহিদা খাতুনকে এলোপাতারিভারে মারধর করে। এক পর্যায়ে তার ছেলে ধারালো অস্ত্র (দা) দিয়ে তাকে কোপ দেয়। তিনি কৌশলে দায়ের কোপ থেকে রক্ষা পেয়ে প্রাণে বেঁচে গেলেও বৃদ্ধাকে লাথি, কিল ঘূষি মেরে সারা শরীর ছিলাফোলা ও জখম করে।

প্রসঙ্গত, গত বছর ১৫অক্টোবর একইভাবে অসহায় শাহিদা খাতুনের ছেলে,নাতী ও ছেলের বউ তাঁকে বাড়ি থেকে মারধর করে বের করে দিয়েছিলেন। তখন তিনি দু’দিন ধরে বাড়ির সামনে বসে ছিলেন এবং কাঁদছিলেন। বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রচার হলে প্রশাসনের নজরে আসে।পরে পুলিশ,সাংবাদিক,স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের সহায়তায় ওই বৃদ্ধা শাহিদা খাতুনকে তাঁর ঘরে তুলে দেন। 

নির্যাতিত বৃদ্ধ শাহিদা খাতুন জানান, এঘটনার কিছুদিন পর থেকে তার ছেলে আবার সেই আগের  মতোই ব্যবহার শুরু করে এবং তার বসতঘর থেকে বের করে দিয়ে রান্না ঘরে থাকতে দেন। আমি দীর্ঘ ৪মাস রান্না ঘরেই থেকেছি। তারপরও ‘ছেলে, বেটার বউ আর নাতি আমাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। প্রায় ১৪ বছর আগে আমার স্বামী মারা যান।স্বামীর পেনশানের টাকায় ঘর করেছি। কিন্ত সে ঘরে আমার জায়গা নেই। আমাকে থাকতে দেওয়া হচ্ছেনা।এ বয়সে কি কেউ স্বামীর ভিটা ছাড়তে চায়! আমি আমার স্বামীর ভিটায় থাকতে চাই।’

অভিযুক্ত ছেলে শাহ আলম বলেন, ‘আমার মা তার সব জমি মেয়েদের নামে লিখে দিয়েছেন। তিনি তার মেয়েদের বাড়িতে থাকবে। আমার বাড়িতে তার কোনো জায়গা হবেনা।’

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠিয়ে ওই বৃদ্ধার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে