বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে কুকি-চিন আর্মির ঘাঁটিতে সেনা অভিযান, নিহত দুই

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৩ জুলাই, ২০২৫, ০৩:১২ পিএম
বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে কুকি-চিন আর্মির ঘাঁটিতে সেনা অভিযান, নিহত দুই

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় সশস্ত্র সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর চালানো অভিযানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) কমান্ডারসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ভোরে রুমার দুর্গম পলি প্রাংসা এলাকায় সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, অভিযানে তিনটি সাবমেশিনগান (এসএমজি), একটি রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, অভিযান চলমান রয়েছে এবং সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে পাল্টা গুলিবিনিময়ের সময় দুইজন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে একজন কেএনএ-র গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডার বলে জানানো হয়েছে।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী জানিয়েছেন, ভোরের দিকে সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালায় এবং গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। পরে তল্লাশি চালিয়ে দুইজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, পলি প্রাংসা এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে এবং এখনও বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে, সেনাবাহিনী অভিযান চালানোর পাশাপাশি পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে এবং সন্ত্রাসীদের আস্তানা শনাক্তে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদাবাজি ও সহিংসতার কারণে সেনাবাহিনীর অভিযান বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্লেখ্য, পাহাড়িরা কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-কে বম পার্টি নামে চেনে। এ সংগঠন ‘কুকি-চিন রাজ্যে’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চায় যেখানে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী থাকবে না; সেখানে কেবল বম, খিয়াং, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি ও ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষ থাকবে। কেএনএফ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা কেএনএ-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যেই বম সম্প্রদায়ের প্রায় তিন হাজার মানুষ ভারত সীমান্তের মিজোরাম এবং বনজঙ্গলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। তবে বম সোশাল কাউন্সিল এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাদের অনেকেই সম্প্রতি নিজ এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন।

বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু জানিয়েছেন, সেনা অভিযান নিয়ে বিস্তারিত জানাতে রুমা সেনা জোনে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন সেনা কর্মকর্তারা। আইএসপিআর জানিয়েছে, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সেনাবাহিনীর এই সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে