রাজশাহী বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি, ক্ষমতার চরম অপব্যবহার, সহকর্মীদের সাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং সরকারি সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। আব্দুস সামাদ নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত ফিল্ড সুপারভাইজার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই সাথে তিনি সঠিক তদন্তের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান একজন “অত্যাচারী, অহংকারী, চরিত্রহীন ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা”। তার ভাই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব হওয়ায় তার প্রভাব খাটিয়ে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছেন। বিগত সরকারের আমলে আনসার ভিডিপি হতে রাষ্ট্রপতির কোটায় আসা সৈয়দ মোস্তাক হাসান উপসচিব হন। বিগত সরকারের আমলে চাকুরী জীবনের প্রায় সময় রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। জানা গেছে সৈয়দ মোস্তাক হাসানের আপন ভাই সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব হওয়ায় অপকর্ম করা সাহস পান এবং অনেকের সাথে ঔদ্বত্তপূর্ণ আচরণ করে থাকেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নাটোরের লালপুরে ক্যান্সার, কিডনী ও লিভার সিরোসিসের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এই পরিচালক। এছাড়া- বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়েছেন। বিভিন্ন প্রশিক্ষণে উপস্থিত না থেকেও তিনি সম্মানীর টাকা জোরপূর্বক আদায় করেন এবং ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দ তুলে নেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সৈয়দ মোস্তাক হাসান তার অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন। অফিস সহকারী মো. আরিফুল ইসলামকে তিনি তুচ্ছ কারণে “ব্যাটাশালা, চুদিরভাই” বিভিন্ন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তার অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওই কর্মচারী অন্যত্র বদলি হতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া মো. দেলোয়ার হোসেন এবং ড্রাইভার রজিবুল ইসলাম ও রাজুকেও একই ধরনের গালিগালাজ ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওই দুই ড্রাইভারও বদলি হয়ে যান। পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসান নিয়মিতভাবে সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। মেয়ের স্কুলে আনা-নেওয়া, বাজার করা এবং নাটোরের লালপুরে গ্রামের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য তিনি গাড়ি ব্যবহার করেন। এছাড়াও পরিচালকের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রায় সকল প্রশিক্ষণ ও অনুষ্ঠানে বিশেষ সুযোগ সুবিধা এক নারী কর্মকর্তাকে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের একাধিক কর্মচারী বলেন, পরিচালকের খারাপ আচার-আচরণে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে। সেটি সঠিক ভাবে তদন্ত করলে পরিচালকের সকল অনিয়ম দুর্নীতি বের হয়ে আসবে। অভিযোগকারী আব্দুস সামাদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সৈয়দ মোস্তাক হাসানের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। তার এসব অনিয়ম দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগের সঠিক তদন্তের দাবি করছি। এসব অভিযোগের বিষয়ে পরিচালক সৈয়দ মোস্তাক হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এখন ঢাকায় মিটিংয়ে আছি। তিনি মিটিংয়ে থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।