২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রমাণ করেছে, এবার পরীক্ষায় শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। যেখানে ২০২৪ সালে দুই হাজার ৯৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শতভাগ পাস করেছিল, সেখানে ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৯৮৪টিতে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) একযোগে ফল প্রকাশের পর বিশ্লেষণে এই চিত্র উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবীরের নেতৃত্বে ঢাকার শিক্ষা বোর্ডের সভাকক্ষে ফলাফলের সার্বিক তথ্য তুলে ধরা হয়। এবারও ফল প্রকাশের জন্য আলাদা কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করতে পেরেছে। এর বিপরীতে ১৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজনও পাস করেনি। এই শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও গত বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে। ২০২৪ সালে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল)। পরীক্ষা শেষ হয় মঙ্গলবার (১৩ মে)। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন, যাদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ছিল ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী।
দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পাশাপাশি মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে একযোগে ফল প্রকাশ করে। চলতি বছর পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয় দেশের ৩ হাজার ৭১৪টি কেন্দ্রে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা কম। এবার ফলাফল প্রণয়ন করা হয়েছে ‘বাস্তব মূল্যায়ন’ নীতির ভিত্তিতে।
শতভাগ পাসের হার কমার এই প্রবণতা শিক্ষাবিদদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরন ইত্যাদি নানা বিষয় এই পরিবর্তনের পেছনে ভূমিকা রাখছে।