ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় এক মাদরাসা শিক্ষককে আটকের পর ধামাচাপা দিতে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে রফাদফা করার অভিযোগ উঠেছে গ্রাম্য মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের গাড়াজান গ্রামে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সুত্র বলছে, মালয়েশিয়া প্রবাসী খোরশেদ আলমের অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেন একই এলাকার শহিদ ফরাজির ছেলে স্থানীয় মাদরাসা শিক্ষক মতিয়ার হোসেন।
যার দরুণ অভিযুক্ত ওই মাদরাসা শিক্ষক প্রবাসির স্ত্রীর সাথে দীর্ঘ দিন ধরে অনৈতিক সম্পর্ক করে আসছিলো। আর সেই সুবাদে মাঝে মধ্যেই ওই বাড়িতে যাতায়াত ছিলো তার । সোমবার (৭ জুলাই) রাতে বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হলে তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে আটক করেন ।
এ খবর মুহুর্তেই স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিশে মাদরাসা শিক্ষককে দোষী সাব্যস্থ করে ঘটনার শাস্তি ও দায় মুক্তি হিসেবে দুই লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করে তাকে ছেড়ে দেন মাতব্বরেরা।
এদিকে টাকার বিনিময়ে নারীর ইজ্জত বিক্রির মতো ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন তুলছেন সালিশের রায় নিয়ে, আবার কেউ কেউ ঘটনাটিকে নৈতিক অবক্ষয়ের উদাহরণ হিসেবেও দেখছেন।
হারুন অর রশিদ ও হযরত আলী বলেন, স্থানীয় সুবহান মহুরি এ শালিস করেন। তিনি দুই লাখ টাকায় এ ঘটনা শেষ করে দেন।
প্রবাসির ছোট ভাই হোসাইন আহমেদ রাসেল জানান,
যেহেতু একটা দূর্ঘটনা ঘটেই গেছে তাই আমার চাচা জেঠাসহ এলাকার লোকজন শালিস করে ২ লাখ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করেন। মেয়েটি আমার ভাইকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে।
অভিযুক্তের পিতা শহিদ ফরাজি জানান, আমার ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমার ছেলেকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন। আমি মাতব্বরদের কথামতো ১ লাখ টাকা সুবহান মহুরির কাছে বুজিয়ে দিয়েছি, বাকি টাকা সপ্তাহ খানেক পর দিবো।
শালিসের নেতৃত্বদানকারি সাবেক ইউপি সদস্য সুবহান মহুরি টাকা লেনদেনের বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জানান ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ওই অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক পূর্বেও আরো এমনা ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও তিনি জানান।
ভিকটিম ওই নারী জানান, তাকে জোর করে তালাক দেওয়ানো হয়েছে, তিনি স্বাক্ষর দেয়নি বলে মাতব্বররা মারধরের হুমকি দেন, পরে তাদের ভয়ে ডিভোর্স পেপারে স্বাক্ষর করেন। তাকে কোন টাকা পয়সা দেওয়া হয়নি । তিনি তার সন্তানকে নিয়ে পূর্বের স্বামীর সংসার করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।