মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাক, তবে শালীনতায় : জামায়াত আমির

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনা ও রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে সমাজে শৃঙ্খলা ও ঐক্য রক্ষায় সংযত, শালীন ও দায়িত্বশীল আচরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার নিজস্ব অধিকার, তবে কোনো ব্যক্তি বা দলের চরিত্রহনন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয়।

রোববার (১৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি সমাজজীবনে অনেকগুলো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে চলেছে, যা মানুষকে মর্মাহত করছে। এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে সমাজকে শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এককভাবে কারো নয়। সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ—সবাইকে সমন্বিতভাবে এ দায়িত্ব নিতে হবে। তার মতে, এ ধরনের স্পর্শকাতর সময়ে জাতীয় ঐক্যের ন্যূনতম জায়গাটা থাকা একান্ত প্রয়োজন।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবশ্যই আপনার নিজস্ব অধিকার। তবে এক্ষেত্রে অন্যায়ের প্রতিবাদ হোক শালীন ভাষায়, সমালোচনা হোক যুক্তি ও তথ্যনির্ভর। কোনো ব্যক্তি বা দলের চরিত্রহনন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও নিন্দনীয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “এ ধরনের আচরণ সমাজজীবনে কেবল বিশৃঙ্খলা, বিষোদগার ও অনৈক্যের বীজ বপণ করবে। তাই সবার পক্ষেই সংযত, সাবধানী ও দায়িত্বশীল আচরণ অত্যন্ত প্রয়োজন। মহান আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে এই বাস্তবতাটি উপলব্ধি করার তাওফিক দেন। আমিন।”

এর আগে শনিবার (১২ জুলাই) দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে পৃথক এক স্ট্যাটাসে ডা. শফিকুর রহমান বিভিন্ন সহিংস ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রফেসর পাড়া মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা খতিব মাওলানা আ ন ম নূর রহমান মাদানীর ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এ হত্যাচেষ্টাকে কেন্দ্র করে চরমপন্থি মানসিকতার একজন ব্যক্তি এমন জঘন্য অপরাধ করেছে, যার দৃষ্টান্তমূলক ও দ্রুত শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, এমন শাস্তিই ভবিষ্যতে কাউকে এ ধরনের অপকর্ম করতে নিরুৎসাহিত করবে।

এ ছাড়া খুলনায় যুবদলের বহিষ্কৃত এক নেতাকে হত্যা করার ঘটনাতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জামায়াত আমির। তিনি বলেছেন, প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে, নতুবা এ দায় এড়ানো যাবে না।

ডা. শফিকুর রহমানের ভাষায়, “জাতীয় ঐক্য ও সামাজিক স্থিতি রক্ষায় আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা উচিত। কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা বিভাজনের মনোভাব দিয়ে সমাজে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব নয়। বরং যুক্তি, তথ্য এবং শালীন ভাষাই হতে পারে সুস্থ সমাজচর্চার ভিত্তি।”