শাপলা প্রতীক না পেলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি এনসিপির

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৩ জুলাই, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
শাপলা প্রতীক না পেলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি এনসিপির

নির্বাচন কমিশন থেকে শাপলা প্রতীক না পেলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। একই সঙ্গে কমিশন পুনর্গঠনের জোর দাবি তুলেছে দলটি। নির্বাচনী প্রতীক, কমিশনের নিরপেক্ষতা, প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন এনসিপির নেতারা।

বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, “নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে আমাদের শাপলা ছাড়া বিকল্প অপশন নেই। লিগ্যাল ওয়েতে আমরা দেখেছি, আইনগতভাবে শাপলা পেতে আমাদের কোনো বাধা নেই। যদি বাধা দেওয়া হয়, সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়াই করব।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের অনেকেই দলীয় মুখপাত্রের মতো আচরণ করছেন। তাই নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর ভাষায়, “ইসি পুনর্গঠন করতে হবে। স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড। ইসি যেভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল, সেই আইনটিও পরিবর্তন করতে হবে। তবে ইসিতে যাঁরা নিজেদের ভালো কাজের পরিচয় দিয়েছেন, তাঁদের রাখা যেতে পারে।”

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ।

বৈঠকে আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, শাপলা প্রতীক বরাদ্দের জন্য নতুন একটি আবেদন নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, শাপলা প্রতীক জাতীয় প্রতীকের অংশ হলেও তা কোনোভাবে আইনগত বাধা নয়। কারণ, জাতীয় প্রতীকে শুধু শাপলা নয়, পাটপাতা, ধানের শীষ, তারকা চিহ্নও আছে এবং সেগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বহুদিন ধরে ব্যবহার করছে। তবে জাতীয় প্রতীকের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রং এবং মাপের বিষয়টি অনুসরণ করতে হয়। তিনি জানান, এনসিপির পক্ষ থেকে কমিশনের নজরে আনা হয়েছে যে, শাপলা প্রতীক পেতে তাঁদের কোনো আইনি বাধা নেই।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়ার বিষয়েও কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে এনসিপি। জহিরুল ইসলাম বলেন, “যেহেতু আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত আছে, তাই কমিশনের তালিকা থেকে নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়ার কথা। আমরা কমিশনের নজরে এনেছি, কমিশন বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।”

প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। জহিরুল ইসলাম জানান, কমিশন প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।

এর আগে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, শাপলাকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে বিধিমালায় তফসিলভুক্ত করা হবে না। এনসিপির আবেদনে শাপলা ছাড়াও প্রতীক তালিকায় কলম এবং মোবাইল ফোনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে নিবন্ধিত দল নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলে ৬৯টি নির্বাচনী প্রতীক রয়েছে। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন প্রতীকের সংখ্যা ১১৫-এ উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে।

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে এনসিপি সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে আবেদন জমা দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে জহিরুল ইসলাম বলেন, কমিশন জানিয়েছে, নিবন্ধন প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে