জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৩তম দিনের আলোচনা সভায় বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রূপান্তরিত করতে নারীদের বলিষ্ঠ ও সক্রিয় ভূমিকা ছিল অপরিহার্য। তিনি নারীদের এই অবদানকে রাষ্ট্র বিনির্মাণে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার গুরুত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ড. আলী রীয়াজ স্মরণ করেন, গত বছরের ১৪ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর এক বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে শিক্ষার্থীরা রাতের অন্ধকারে রাস্তায় নেমে আসে। তাদের এই সাহসিকতা থেকে দেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্রুত আন্দোলনের পক্ষে সাড়া দেন, যা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে এক নতুন মোড় আনে। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের দৃঢ় প্রতিরোধ ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরই ফ্যাসিবাদী শাসনকে প্রতিরোধে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ১৪ জুলাইকে ‘জুলাই নারী দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা নারীদের আন্দোলনে অবদানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন। পাশাপাশি রাষ্ট্র গঠনে নারীদের অংশগ্রহণকে শুধু নির্বাচনী আসনে সীমাবদ্ধ না রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়েও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সম্মানজনক অবস্থান দিতে হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলাম, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ছিলেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালন করেন জাতীয় ঐকমত্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
ড. আলী রীয়াজ আরও বলেন, নারীকে দমিয়ে রাখা মানে রাষ্ট্রের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা। তাই নারীদের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক মর্যাদা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আজকের আলোচনায় নারীদের জন্য নির্ধারিত সংসদীয় আসন এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের বিষয়েও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো এক যৌক্তিক সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রগতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।