উত্তরাঞ্চলের মধ্যে পেঁয়াজ আবাদে খ্যাত পাবনার সুজানগরে পেঁয়াজের পর এবার সরিষা আবাদে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। পেঁয়াজ এ জনপদের মানুষের প্রধান অর্থকরী ফসল হওয়ায় অন্যান্য বছর চলতি এ মৌসুমে উপজেলার ফসলী মাঠের দিকে তাকালে শুধু পেঁয়াজ আর পেঁয়াজ চোখে পড়তো। কিন্তু এ বছর পেঁয়াজের পাশাপাশি মাঠে মাঠে ব্যাপকভাবে শোভা পাচ্ছে সরিষা ফসল। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫৬৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু অনুকূল আবহাওয়া আর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কৃষি প্রণোদনা দেওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে আবাদ হয়েছে ১৫৭০ হেক্টর জমিতে। বিশেষ করে উপজেলার অধিকাংশ উঁচু জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের আন্ধারকোটা গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, এ বছর আমি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে তথা কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৩বিঘা জমিতে বারি সরিষা-১৪ আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে ফুলে-ফলে মাঠ ভরে গেছে। আশা করছি ফলন ভাল হবে। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক আজমল হোসেন বলেন সরিষা আবাদে খরচ কম লাভ বেশি। সেকারণে এ বছর উপজেলার বড় কৃষক থেকে শুরু করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকরা পর্যন্ত সরিষা আবাদ করেছে। তিনি আরো বলেন প্রতি বিঘা সরিষা আবাদে সার-বীজসহ উৎপাদন খরচ হয় ২৫‘শ থেকে ৩হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা উৎপাদন হয় ৫ থেকে ৬মণ। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতিমণ সরিষার দাম ৩ থেকে প্রায় ৪হাজার টাকা। ফলে বর্তমান এ বাজারে উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি বিঘা সরিষায় কৃষকের দিগুণেরও বেশি লাভ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন সরকার ভোজ্য তেলের উপর আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে আগামী ৩/৪বছরের মধ্যে শতকরা ৪০ভাগ তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি নানাভাবে সহযোগিতা করছে। ফলে উপজেলার কৃষকরা দিনের পর দিন সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন।