ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবাদে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকেলে 'বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীবৃন্দ' ব্যানারে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধে আঘাত এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ করবে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশে হলে বৃদ্ধি পাবে সমকামিতা। যা বাংলাদেশের মূল্যবোধর সঙ্গে যায় না। বাধা দিতে পারে জুলাই গণহত্যায় সর্বোচ্চ শাস্তির।
শিক্ষার্থীরা বিরোধীতার চারটি কারণ জানিয়েছেন, তা হলো:-
১. সার্বভৌমত্বগত সমস্যা
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় দেশের অভ্যন্তরীণ নানান বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে। পররাষ্ট্রনীতিতে আমাদের স্বকীয়তা থাকবে না। মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিশীল হবে। পাহাড়ের সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আরো বেশি সক্রিয় হয়ে উঠবে। দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র পরিবর্তন তথা পরিকল্পিত ইহুদীবাদী খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠন তরান্বিত হবে।
২. মূল্যবোধগত সমস্যা
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় এলজিবিটিকিউ (সমকামিতা, ট্রান্সজন্ডার ইত্যাদি) এবং পতিতাবৃত্তির স্বীকৃতি ও ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে থাকে। যা বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক মূল্যবোধ ও প্রচলিত আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষা সিলেবাসেও তারা এসব বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করবে। যার কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা খুবই উদ্বিগ্ন।
৩. আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন
যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপিত হয়েছে সেসব দেশের আন্তর্জাতিক স্ট্যাটাস অত্যন্ত নিম্নমানের। বাংলাদেশে এই অফিস স্থাপিত হওয়ায় দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে। সাধারণত যুদ্ধবিদ্ধস্ত ও চরম অস্থিতিশীল দেশগুলোতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপিত হয়ে থাকে। অথচ বাংলাদেশ ওরকম কোনো অবস্থায় নেই।
৪. মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হ্রাস
ধর্ষক কিংবা খুনী যাদের শাস্তি বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে, এসব অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থেকে সরকারের উপর চাপ আসবে। ফলে দেশে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে এবং ফরীয়াদীরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের কর্মকাণ্ড দেশের নানান সেক্টরে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরী করবে। এজন্য আমরা এর প্রতিবাদে মাঠে নেমেছি।
সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি- সরকার যেন অতি দ্রুত জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সমঝোতা/চুক্তি বাতিল করে।