দেশের অন্যতম চা শিল্পাঞ্চল শ্রীমঙ্গলে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির সম্ভাবনা দিন দিন বাড়ছে। তারই অংশ হিসেবে কাঁচা মরিচ চাষ এখন লাভজনক এক ফসল হিসেবে উঠে এসেছে। শ্রীমঙ্গলে কাঁচা মরিচ চাষে দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা। কৃষি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে এই জনপ্রিয় মসলা জাতীয় ফসল। হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ধরা হয়েছে ১০ টন। ফলে সর্বমোট উৎপাদন দাঁড়াবে প্রায় ১০০ টন। বাজারে কাঁচা মরিচের চাহিদা ও মূল্য দুটোই বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা এবার লাভবান হবেন। কৃষকরা জানান, জমি চাষ, চারা রোপণ, সেচ ও পরিচর্যা করায় উৎপাদনও বেড়েছে আগের তুলনায়। কৃষকরা জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় মরিচ চাষে মুনাফা ভালো এবং বাজার চাহিদাও রয়েছে।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুমা পাল ও মাসুকুর রহমান জানান, এবার উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন ধরা হয়েছে ১০ টন। ফলে এবার মরিচ মৌসুমে ১০০ টন মরিচ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল শিববাড়ি সংলগ্ন এলাকায় মো. শহিদুর রহমানের ৪৫ শতকের মরিচের প্লটে গিয়ে দেখা যায়, মহিলারা মরিচ তোলায় ব্যস্ত। ভাল ফলন হয়েছে। শহিদ জানান, তিনি ১৫ দিন পর পর মরিচ তোলেন। ৪৫ শতকের প্লটে মরিচ করতে তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি মরিচ বিক্রি করেছেন ১ লাখ টাকা। তিনি বলেন, আগামী নভেম্বর পর্যন্ত মরিচ গাছ থেকে তোলা যাবে। সব মিলিয়ে তিনি ৫ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে জানান।
আরেক কৃষক জাভেদ মিয়া বলেন, তিনিও ৪৫ শতক জমিতে বিজলি-১ জাতের মরিচ চাষ করেছেন। তার মোট খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি মরিচ বিক্রি করেছেন দেড় লাখ টাকা। আগামী নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ৬-৭ লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন বলেন, গ্রীষ্মকালীন মরিচ হলো বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল, যা সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে চাষ করা হয় এবং মে থেকে আগষ্ট পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। ভালো ফলন এবং বাজারে নায্য দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সরকারি সহযোগিতাও দেয়া হয়ে থাকে।
শ্রীমঙ্গলে কাঁচা মরিচ চাষ শুধু স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে না বরং কৃষকদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলছে। সরকারের সহায়তা এবং কৃষকদের উদ্যম অব্যাহত থাকলে শ্রীমঙ্গল হতে পারে কাঁচা মরিচ উৎপাদনের একটি সম্ভাবনাময় অঞ্চল।