নানামুখী সংকটের মধ্য দিয়ে দেশ ক্রমেই বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির বিপর্যস্ত অবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা, শিল্প-কারখানা ধুঁকছে, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে, শ্রমিক বেকার হচ্ছে, নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে না, জননিরাপত্তা হুমকিতে, মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ দিশাহারা। এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে দ্রুত নির্বাচিত সরকার আসা প্রয়োজন, যারা শক্ত হাতে রাষ্ট্রের হাল ধরতে পারবে, চরম বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারবে। দেশের রাজনীতিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও বিশিষ্টজনরা বলছেন, সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও নির্ভরযোগ্য নির্বাচন হতে হবে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে একটি সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেড় দশক ধরে চেপে বসে থাকা স্বৈরাচারকে বিদায় করা হয়েছিল। সে সময় দেশে যে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে উঠেছিল, নানা কারণে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অনেক রাজনৈতিক দলই মনে করে, দু-একটি দলের প্রতি বিশেষ নমনীয়তা দেখিয়ে এই সরকার তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। ফলে দ্রুত নির্বাচন না হলে দেশ ক্রমে বড় ধরনের সংকটে পড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তিনি বলেন, ভেতর থেকে দুর্বল ও ভঙ্গুর এই রাষ্ট্র আরো অনেক কিছুকে ভঙ্গুর করে দিচ্ছে। তাদের মতে, বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্লাসরুমে ছেলেদের ফিরে না যাওয়া, নানা দিক থেকে সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। একটি ক্রেডিবল নির্বাচন দেশকে স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী সংস্কারগুলো নির্বাচিত সরকারই করবে। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সংস্কারের নামে নতুন নতুন প্রস্তাব সামনে এনে অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। দলটি বলেছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এমন সব সংস্কার প্রস্তাব আনছে, যা বাস্তবায়নযোগ্য নয়, যার কারণে বিব্রত হতে হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের অভিমত, দেশে দেশে গণতন্ত্রের স্বাভাবিক প্র্যাকটিসগুলোও কমিশন উপেক্ষা করতে চাচ্ছে। আমরা আশা করি, পরিস্থিতি আরো জটিল হওয়ার কিংবা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই অন্তর্বর্তী সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক বিভক্তি আরো বৃদ্ধি পায় এমন সংস্কার থেকে বিরত থাকাই ভালো হবে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে হবে।