উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরজুড়ে বাড়ছে ঝুঁকি। বাতাসের গতিবেগ বাড়ার পাশাপাশি সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। এতে উপকূলজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত একটি লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপে এবং পরে নিম্নচাপে রূপ নেয়। শুক্রবার সকাল ৬টায় এটি উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় (২১.৩° উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৯.৬° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল।
নিম্নচাপটির অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার বিকেলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের আশপাশের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্য বেড়ে গেছে এবং দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, অমাবস্যা এবং নিম্নচাপের যুগপৎ প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
সতর্কতা হিসেবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেসব আশ্রয়ে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।