নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৪ সালে তাদের মোট আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা, আর ব্যয় হয়েছে চার কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা।
ফলে দলের হাতে বর্তমানে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।
রোববার সকাল ১১টার দিকে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের কাছে এ হিসাব জমা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
হিসাব জমা দেওয়ার পর রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “দলের আয়ের প্রধান উৎস ছিল সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই ও পুস্তক বিক্রি, ব্যাংক সুদ এবং এককালীন অনুদান। অন্যদিকে ব্যয়ের বড় অংশ গেছে কর্মসূচি বাস্তবায়ন, লিফলেট-পোস্টার মুদ্রণ, ব্যক্তিগত ও দুর্যোগকালীন সহায়তার পেছনে।”
অতীতের নির্বাচন কমিশনার নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, “এক সময় নির্বাচন কমিশন ছিল নির্বাহী বিভাগের অধীনে পরিচালিত, ছিল ফ্যাসিবাদের হাতিয়ার। সে কমিশন রাতের আঁধারে ভোট দিয়ে লুটের নির্বাচনের বৈধতা দিয়েছিল। এমনকি মেরুদণ্ডহীন ও চাকরির প্রতি লোভী ব্যক্তিদের দিয়ে কমিশন গঠন করা হয়েছিল।”
শেখ হাসিনার পদলেহী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল ইসি। তবে আমরা আশা করি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অতীতের সেই বিতর্কিত ভূমিকা থেকে বেরিয়ে এসে দায়িত্বশীল আচরণ করবে। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করবে এবং যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। ইসি যেন একটি আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, এটাই বিএনপির প্রত্যাশা করেন রিজভী।
এর আগে গতকাল শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আলম জানিয়েছিলেন, আগামীকাল (রোববার) বিএনপির একটি প্রতিনিধি গত পঞ্জিকা বছরের (২০২৪ সাল) আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে আসবে।
এর আগে গত ৭ জুলাই ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, নিবন্ধিত দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় তাদের চিঠি দেওয়া হয়নি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী পর পর তিন বছর দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
বর্তমানে ইসিতে আওয়ামী লীগসহ নিবন্ধিত দল ৫১টি হলেও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় ৫০টি দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।