কালিগঞ্জে শেখ নজরুল নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, জবরদখল ও অর্থ আত্মসাতের প্রতিকার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টায় কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলার গান্ধুলিয়া গ্রামের মরহুম মোশারাফ হোসেন তরফদারের ছেলে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান স্যান্ডো (৫৫) বলেন, উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের বাজুয়াগড় গ্রামের মরহুম শেখ সতোর উদ্দীনের বড় ছেলে কথিত শিল্পপতি শেখ নজরুল ইসলাম (৬২) বিগত ২৫/৩০ বৎসর পূর্বে সংসারে অভাব অনটনের করণে এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি জমান। সেখানে পর্যায়ক্রমে পারাবার শিপিং নামক একটি পতিষ্ঠান গড়ে সি.এন্ড, এফ ব্যবসা শুরু করেন। শেখ নজরুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রতারণামূলকভাবে বিভিন্ন পণ্যের এইস,এস কোড বসিয়ে প্রচুর পরিমানে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন। এছাড়াও তিনি বন্দরের শ্রমিকদের ন্যয্য মুজুরী না দিয়ে এবং বিভিন্ন অফিস বানিয়ে সেই সব অফিসের কর্মচারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিক না দিয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারি আমলাদের বিশেষ করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের একাধিক মন্ত্রী এমপিদের ব্যবহার করে এবং প্রশসনের ছত্রছায়ায় গুন্ডা বাহিনী গড়ে তুলে অগাধ সম্পদের মালিক হয়ে নিজ গ্রামে শিল্পপতি নামে নিজেকে আখ্যায়িত করেন। তিনি দেশের বিভিন্ন শহরে একাধিক ফ্লাট, বাড়ি, ফ্যাক্টরী ও দামি দামি জমি কিনে এক এলাহি কান্ড সৃষ্টি করেছেন। আস্তে আস্তে তার ভয়াবহ করালগ্রাসি ছোবলে পড়ে তার জন্মস্থান বাজুয়াগড়সহ গাঁন্ধুলিয়া, রতনপুর, পিরোজপুর ও বাহাদুরপুরের দিকে।
ভুক্তভোগী মোঃ সিদ্দিকুর রহমান স্যান্ডো আরও বলেন, শেখ নজরুল ইসলাম বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরীর নাম করে নিরীহ মানুষদের চাকরি দেওয়া, কাউকে ঘরবাড়ি বানিয়ে দেওয়া ইত্যাদি প্রলোভনের মাধ্যমে অনেক সু-কৌশলে তাদের জমি, পুকুর ও বসতভিটা দখল করে নিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি জোরপূর্বক সেসব জায়গায় নিজ ব্যবহারের রাস্তা বানানোর পাশাপাশি নিরীহ মানুষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা ও হামলার মাধ্যমে এক বিভীষিকময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন।
তার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বাজুয়াগড় গ্রামের নুরুল চেয়ারম্যানের ছেলে রবিউল ইসলাম টোকনকে জীবন বিসর্জনও দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রভাবশালী ভূমিদস্যু শেখ নজরুল ইসলামের কারণে বাজুয়াগড় গ্রামের আব্দুল্লাহ (৪৭) ও আব্দুল করিম (৫০)সহ আরও কয়েকজন নিজ বসতভিটা ছেড়ে সরকারি রাস্তার পাশে বসবাস করে অসহায় জীবনযাপন করছেন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী গান্ধুলিয়া গ্রামের সাবেক কৃতী ফুটবলার মতি তরফদারের নিকট থেকে হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও শিল্প কারখানা বানানোর নামে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে জমি নিয়ে পরে সেখানে নিজ ব্যবহারের জন্য রাস্তা তৈরী করলেও প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নির্মাণ থেকে তিনি বিরত থেকেছেন। তিনি আরও অনেকের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সীমাহীন প্রতারণা করেছেন যা তদন্তে প্রমাণিত হবে।
সুচতুর, ডিজিটাল ষড়যন্ত্রকারী ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী, গুন্ডা ও আওয়ামী লীগের দোসর শেখ নজরুল ইসলামের কুকর্মের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বাজুয়াগড় গ্রামের এন্তাজ আলীর ছেলে বাখর মিয়া (৪৫) ও আমজাদ হোসেন (৪৮)সহ আরও কয়েকজন দুর্বৃত্ত। দীর্ঘদিন ধরে এসব কর্মকান্ড চালালেও নজরুল গংদের অন্যায় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী রুখে দাড়ানোর মতো সাহস পান না। তারপরও জীবনের মায়া ত্যাগ করে উক্ত শেখ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী গত ২৪/০৬/২৫ তারিখে গান্ধুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। উক্ত মানববন্ধন থেকে নিরীহ এলাকাবাসী তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া সকল অন্যায়, নিপীড়ন ও হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
একজন ভুক্তভোগী হিসেবে মোঃ সিদ্দিকুর রহমান স্যান্ডো কথিত শিল্পপতি শেখ নজরুল ইসলামের অনিয়ম, দুর্নীতি, প্রতারণা, জবরদখল ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক কঠোর দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।