সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ নয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাটু পানি জমে থাকে। এতে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক শিক্ষীকাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ সমস্যা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে থাকলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। চলতি বছরে ৪৬ হাজার টাকার ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প আসলেও মাত্র কয়েক ট্রাক মাটি ভরাট করেছে এক ইউপি সদস্য। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে হাটু পানি পনি মারিয়ে ক্লাসে যেতে হচ্ছে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরগজ নয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়য়ে মাঠে হাটু পানি জমে রয়েছে। মাঠ থেকে পানি বের হয়ে যাবার কোন ড্রেন না থাকায় এ অবস্থা বলে জানিয়েছেন স্থানাীয়রা। ফলে একটু বষ্টি হলেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝুকি নিয়ে পানি মারিয়ে ক্লাসে যেতে হচ্ছে।
হরগজ নয়া পাড়ার মো. শামিম মোল্লা বলেন, এ বিদ্যালয়ে গেল ১৭ বছরে কোন উন্নয়ন প্রকল্প দেওয়া হয়নি। ৫ আগষ্টের পর পানি নিস্কাকশনের জন্য প্রায় ৪৬ হাজার টাকার প্রকল্প হাতে নেয় । কিন্তু ২ নং ওয়ার্ড সদস্য শাজাহান মুল্যা অনিয়ম করে কছেক ট্রাক মাটি ফেলে মাঠে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে হাটু পানি জমে থাকে। ফলে দ্রুত সমাধান না করলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
হরগজ নয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র নিরবের পিতা রাসেল মিয়া বলেন, আমার সন্তানরা স্কুলে যায় ঠিকই। মন টিকে না। কখন সন্তান পানিতে পড়ে যায় এ ভয় থাকে মনে সবসময়।
৫ম শ্রেণীর ছাত্রী সোহানা আক্তারে মাতা শেখা আক্তার বলেন, শুনেছি টাকা আসছিল মাঠে কাজ করার জন্য। সেটা নাকি কাজ না করেই টাকা মাইরা খাইছে। শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
৩য় শ্রেণীতে পড়ুয়া রাইসার পিতা রুবেল মিয়া বলেন শিশু ও ১ম শ্রেণীতে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে ঝুকিতে থাকে। সামান্য বৃষ্টিতে হাটু পানি জমে থাকে মাঠে। ফলে যে কোন সময় এ শিশুরা পানিতে পড়ে যেতে পারে। আমরা এ বিষয়ে অনেকবার বলেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
৫ম শ্রেলীর ছাত্রী সুমাইয়া বলেন, পানি জমে থাকলে ক্লাস রুমে ঢুকা ও বের হবার সময় প্রায় আমাদের বই খাতা পানিতে পড়ে যায়। তাছাড়া পানি জমে থাকার সময় আমরা কোন খেলা ধুলা করতে পারি না। দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকলে আরো মশার উপদ্রপ বেড়ে যায়। আমরা এ পরিবেশ চাই না। পড়া লেখার পাশা পাশি নিয়মিত মাঠে খেলা ধুলা করতে চাই।
এ ব্যাপারে হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. শাজাহান মুল্যার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে হরগজ নয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষীকা সীমা রানী সরকার বলেন, আমার বিদ্যালয়ে মোট ১৮১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে মাঠে। এ ব্যাপারে কাজের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। স্থানীয় মেম্বার ৪ ট্রাক মাটি ফেলেছে মাঠে। আবার বরাদ্ধ পেলে মাটি ফেলা হবে বলেছে তিনি। আর মাঠে পাইপ লাগানো হয়েছে বলে দাবী করেন এ শিক্ষীকা।
হরগজ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন বলেন, হরগজ নয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে পানি জমে থাকে। ফেলে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে কাবিখা ২৪-২৫ অর্থ বছরের দেড় টন বরাদ্ধ দেওয়া হয় একটি ড্রেন নির্মাণ করার জন্য। আমার জানামতে কাজটি সঠিকভাবে নির্মাণ করা হয়নি বলে পানি সমস্যা রয়েই গেছে।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, মাঠে পানি জমে থাকে এবং কাবিখা প্রকল্পে অনিয়ম হয়েছে। এ বিষয়ে আমার দপ্তরে কেউ জানাননি। লিখিত আকারে কেহ অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং পানি জমে থাকার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।