গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান ও আশুলিয়ায় চালানো গণহত্যা স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, সরকারের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত দেশের জন্য বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনছে। এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো ফ্যাসিস্ট শক্তিকে আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) আশুলিয়ায় বিএনপির আয়োজিত ‘নারকীয় আশুলিয়া স্মরণে’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সমাবেশে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। একই দিনে আশুলিয়ার শ্রীপুরে শহীদ শ্রমিক, ছাত্র ও জনতার পরিবারবর্গের সম্মানে আয়োজিত স্মরণসভায় তারেক রহমান বলেন, “জুলাইয়ে সাভারে যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল, সেখানে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে এমনভাবে, যা কারবালার নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে।”
তারেক রহমান বলেন, “জুলাই মাসের ওই গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারান শ্রমিকরা। বিশেষ করে সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। শুধু হত্যা নয়, লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। লাশের সঙ্গে এমন বর্বরতা, নির্মমতা কারবালার ঘটনাকেও হার মানিয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, আশুলিয়ার মতো নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় সরকারের নীতিনির্ধারকদেরই নিতে হবে। সেই সময়ের শাসকগোষ্ঠীর একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত, গণদাবির প্রতি চরম অবহেলা এবং স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবই ফ্যাসিবাদী দমননীতিকে উৎসাহিত করেছে। তার ভাষায়, “৫ আগস্ট যখন ফ্যাসিস্টদের পালানোর দিন ছিল, তখন আশুলিয়ায় চলছিল গণহত্যা।”
তারেক রহমান বলেন, “গত বছরের জুলাইয়ের সেই আন্দোলনে শ্রমিকদের সরাসরি কোনো স্বার্থ জড়িত ছিল না। তারা সরকারি চাকরি বা অন্য কোনো সুবিধার প্রত্যাশা করেননি। তাহলে কেন রাস্তায় নেমেছিলেন? কারণ স্পষ্ট যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় ফ্যাসিস্ট থাকে, তাহলে কোনো নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার থাকবে না, কোনো ন্যায্য দাবিও আদায় হবে না। এই উপলব্ধি থেকেই শ্রমজীবী মানুষ রাস্তায় নেমেছিল।”
সমাবেশে বিএনপির পক্ষ থেকে আশুলিয়ায় নিহতদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন, মানুষ শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য রাজপথে নামেনি তারা একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন নিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তারেক রহমান আরও বলেন, “সরকার জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারছে কি না, সন্দিহান। উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইলে সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।”