চলতি ২০২৫ সালের জুলাই মাসের প্রথম ২৯ দিনে বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এ সময় প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২২৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩১ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, যা সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহে এক উল্লেক্ষযোগ্য অগ্রগতি নির্দেশ করে।
বুধবার (৩০ জুলাই) এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান। তিনি বলেন, “চলতি জুলাই মাসে ২৯ দিনেই দেশে এসেছে ২২৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। গত বছর একই সময়ে এসেছিল ১৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার।”
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, ২৯ জুলাই (রোববার) একদিনেই দেশে এসেছে ৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স, যা দিনভিত্তিক রেকর্ডের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রবাহে শ্রমজীবী অভিবাসীদের অবদান ও আন্তরিকতা বিশেষভাবে ধন্যবাদযোগ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, সদ্যসমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পাঠানো মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। দেশের ইতিহাসে এটিই এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় এই রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্দীপক নীতি, বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে উদ্বুদ্ধকরণ এবং হুন্ডি প্রতিরোধে নজরদারি বৃদ্ধি রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অভিবাসী গন্তব্যে শ্রমবাজারে স্থিতিশীলতা এবং চাহিদা বৃদ্ধিও এর অন্যতম কারণ।
দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও টেকসই ও সুরক্ষিত করতে প্রবাসীদের ব্যাংকিং সেবা সহজীকরণ, প্রণোদনা অব্যাহত রাখা এবং অবৈধ পথে অর্থপ্রবাহ রোধে সুশাসন নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।