ঝিনাইদহে ইসলামী শিল্পীগোষ্ঠি কলরবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

এফএনএস (টিপু সুলতান; কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম
ঝিনাইদহে ইসলামী শিল্পীগোষ্ঠি কলরবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামী সংগীত শিল্পীগোষ্ঠি ‘কলরব’ শত শত কোটি টাকার এক দুর্নীতির সাম্রাজ্য বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আইনুদ্দীন আল আজাদের পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলোনায়তনে আইনুদ্দীন আল আজাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তার বড় ভাই মোঃ শামসুল আলম। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আইনুদ্দীন আল আজাদের স্ত্রী উম্মে হাবিবা, শ্বশুর গোলাম নবী, ছেলে গালিব বিন আজাদ, বড় মামা সাইফুল ইসলাম ও ছোট মামা শহিদুল ইসলাম। 

সংবাদ সম্মেলনে বড় ভাই মোঃ শামসুল আলম বলেন, কলরব তার ভাইয়ের হৃদয়ের সংগঠন ছিল। যেটি তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গড়ে তুলেছেন নিষ্ঠা ও শ্রম দিয়ে। সেই সংগঠনটির অফিস বয় বদরুজ্জামান ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা লুটপাটের যন্ত্রে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর মোবাইল ফোনে কলার টিউন ও রিং ব্যাক টিউন হিসেবে কলরবের গজল ব্যবহারে বিপুল অর্থ আয় শুরু হয় কিন্তু পরিবারের সদস্যদের কাছে সে আয়ের কোনো হিসাব কখনোই আসেনি। কথা ছিল শিল্পীগোষ্ঠি কলরব থেকে উপার্জিত অর্থ তার পরিবারকে প্রদান করা হবে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা আয় হলেও আইনুদ্দীন আল আজাদের পরিবারকে কিছুই দেওয়া হয় না। ফলে আইনুদ্দীন আল আজাদের পরিবার আজ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। কৌশলে সংগঠনের সমস্ত আয় এবং মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন বদরুজ্জামান। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নামে আসা স্পন্সর, অনুদান, কনটেন্ট আয়ের সমস্ত কিছুই জমা হয় এখন তার ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ‘হলিটিউন’-এর নামে।

সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা বলেন, তার সন্তানরা আজ এতিম। তারা কলরবের প্রতিষ্ঠাতার উত্তরসূরি হয়েও কোনো সম্মান, কোনো আর্র্থিক সুবিধা থেকেই বঞ্চিত। অথচ যারা একসময় অফিস বয়ের দায়িত্বে ছিলেন, তারা এখন একের পর এক ফ্ল্যাট, গাড়ি, প্রোডাকশন হাউজের মালিক হচ্ছেন। কলরবের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক বদরুজ্জামান এবং প্রধান পরিচালক রশিদ আহমদ ফেরদৌস শুধু সংগঠনের অর্থ আত্মসাৎ করেননি বরং প্রতিষ্ঠাতার স্মৃতি, শ্রম ও সুনামকেও ব্যবহার করেছেন ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের পেছনে। সংগঠনের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজের নাম বদলে ‘হলিটিউন’ করে ফেলা হয়েছে। আয়-ব্যয়ের হিসাব শুধু গোপন করা হয়েছে। কলরব প্রতিষ্ঠার সময় যারা ছিলেন, তাদের অনেকেই আজ সংগঠন থেকে বিদায় নিয়েছেন। যারা প্রশ্ন তুলেছেন, তারা একে একে বহিষ্কৃত হয়েছেন। অথচ সংগঠনের আয় বছরের পর বছর ধরে বেড়েছে যা দিয়ে বদরুজ্জামান ও তার ঘনিষ্ঠজনরা শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ২০০৪ সালে ইসলামী শিল্পীগোষ্ঠি ‘কলরব’ প্রতিষ্ঠা করেন আইনুদ্দীন আল আজাদ। ২০১০ সালে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে কলরব শিল্পীগোষ্ঠি বদরুজ্জামান ও রশিদ আহম্মেদ ফেরদৌস পরিচালনা শুরু করেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে