পুঁজিবাজারে টানা ধীরগতির পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফিরেছে আস্থা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি সূচকেরও বড় উত্থান দেখা গেছে। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯১ দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৪৩ দশমিক ৪১ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬ দশমিক ২০ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪৮ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে যথাক্রমে ১ হাজার ১৭০ দশমিক ৬১ পয়েন্ট এবং ২ হাজার ১১৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে।
সূচকের উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লেনদেন হয়েছে। এদিন ডিএসইতে মোট ১ হাজার ৬৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসের ৭৪৩ কোটি ১৬ লাখ টাকার চেয়ে প্রায় ৩২০ কোটি টাকা বেশি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ডিএসইতে লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়াল।
ডিএসইতে এদিন ৩৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০টির, কমেছে ১৬৭টির এবং ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
লেনদেনের শীর্ষে ছিল সিটি ব্যাংক, যার একদিনেই লেনদেন হয়েছে ৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার। এরপর ছিল ব্র্যাক ব্যাংক (৪০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা) এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা)। তালিকায় আরও ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, যমুনা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।
বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে উচ্চ লভ্যাংশ প্রদানকারী ভালো মানের কোম্পানিগুলোর শেয়ার। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ প্রদানকারী ১০১টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, বিপরীতে কমেছে ৮২টি প্রতিষ্ঠানের, অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টি।
তবে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর ইঙ্গিত দিলেও দাম কমার তালিকাও ছিল বড়। বিশেষ করে মাঝারি মানের ও ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে মিশ্র প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে। বৃহস্পতিবার সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৮১ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২০২ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স সূচক বেড়েছে ১৮৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট, এবং সিএসই-৩০ সূচক ৩৭৩ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট।
তবে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে মাত্র ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার, যা আগের দিনের ২৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার তুলনায় প্রায় ১২ কোটি টাকা কম। এদিন এখানে ২২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১০৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮৭টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, ডিএসইতে লেনদেন ও সূচকের এই ইতিবাচক ধারা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন হবে নীতিগত সহায়তা ও বাজার ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়ানো।