কমিটি নিয়ে বিতর্ক, ছাত্রদল নেতাকে প্রাণনাশের হুমকি

এফএনএস (আবুল কাশেম মোঃ মহিম; সুনামগঞ্জ) : | প্রকাশ: ২ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
কমিটি নিয়ে বিতর্ক, ছাত্রদল নেতাকে প্রাণনাশের হুমকি

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় সম্প্রতি চারটি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই দলীয় অভ্যন্তরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। নতুন কমিটিতে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের পদ প্রদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানান ছাত্রদল নেতারা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাল্লা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ছাত্রদল নেতাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে চরম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের মাঝে।

১ আগস্ট ঘোষিত ওই কমিটিগুলোতে বহুদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের উপেক্ষা করে নতুন মুখ, এমনকি অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন-এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন শাল্লা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রোমান আহমেদ ও ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক সাগর দাশ বাবু।

রোমান আহমেদ বিএনপির হাইকমান্ড বরাবর নিরাপত্তা চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। তিনি অভিযোগে বলেন, “দলের শৃঙ্খলা বজায় রেখে, শালীন ভাষায় আমরা আমাদের মত প্রকাশ করেছি। কিন্তু এর জেরে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সিরাজ মিয়া আমাকে ও সাগর বাবুকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দেন।”

ভাইরাল অডিওতে শোনা যায়, সিরাজ মিয়া উত্তেজিত কণ্ঠে ছাত্রদল নেতা সাগরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “এ পোস্টটা কেন করবি? পাতরা, তরে পিটাইলে ভাইসাব আরও কত ডাকে। তর বাপের নাম কিতা? তুই কই থাকস? ছবি তুইলা কি নেতা হওয়া যায়? আমারে না জিগাইয়া পোস্ট দিছস কেন? দল শাল্লা চালানোর দায়িত্ব আমারে দিছে।” তিনি আরও বলেন, “তুই বান্দিরপুত কই থাইক্কা আইছস? এত বড় সাহস কে দিছে তরে?”

অডিওটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তৃণমূল বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

রোমান আহমেদ তার আবেদনে উল্লেখ করেন, “সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে বিএনপির রাজনীতিতে হাইব্রিড নেতা ও প্রবাসী প্রভাবশালীদের কারণে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এর ফলে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা দলে উপেক্ষিত হচ্ছেন।” এদিকে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সিরাজ মিয়ার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতারা বলছেন, একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের অশালীন ভাষা ও হুমকি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে এবং তা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী। তারা হাইকমান্ডের কাছে বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে