রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাবেক আইজিপি মামুন

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম রাজসাক্ষী হিসেবে হাজির করা হলো পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। তবে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার সময় তার হাতে কোনো হাতকড়া ছিল না।

রোববার (৩ আগস্ট) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এদিনই মামলাটির প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যদিও আসামি শেখ হাসিনা অনুপস্থিত থাকায় বিচার কাজ চলছে একতরফাভাবে।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত কথিত হত্যাযজ্ঞকে ঘিরে পুনর্গঠিত এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনাসহ চারটি মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তারকৃত ১৭ শীর্ষ নেতা ও ওবায়দুল কাদেরসহ আরও ছয়টি মামলার।

প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার সর্বশেষ পরিচিত ঠিকানায় ওয়ারেন্ট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি বিদেশে অবস্থান করায় এবং আদালতে হাজির না হওয়ায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিধান অনুযায়ী বিচার চলছে তার অনুপস্থিতিতেই।

এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির। তাদের মধ্যে রয়েছেন—আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, রাজনৈতিক গবেষক ও লেখক বদরুদ্দিন উমর, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল হাসিনুর রহমান, নাহিদ ইসলাম, উমামা ফাতেমা এবং জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের কয়েকজন পরিবারের সদস্য।

আলোচিত এই মামলাটি রাজনৈতিক অঙ্গন ও মানবাধিকার মহলে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। একদিকে রাষ্ট্রের পক্ষে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে 'আবশ্যক' বলা হলেও, অন্যদিকে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন, এটি একটি ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধের অংশ’। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় সেটি নির্ধারণ করবে ট্রাইব্যুনাল নিজেই।