৪ আগষ্ট সন্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার মিছিলে যোগ দিয়ে ভালুকার মাস্টারবাড়ী আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে আহত করে রাজমিস্ত্রী তোফাজ্জল হোসেনকে। তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন। ফ্যাসিষ্ট হাসিনার সন্ত্রাসীরা লাশ গুম করার চেষ্টা করে। কিন্তু সাধারন জনতার প্রতিরোধের কারনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাশ গুমে ব্যার্থ হয়। পরে হাসপাতাল থেকে বিনা ময়না তদন্তে লাশ নেয়ার জন্য নিহতের পরিবারে উপর চাপ সৃষ্টি করে। কিন্তু পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ পাঠিয়ে দিয়েছিল গাজীপুরের শহীদ তাজুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ৩৬ জুলাই দুপুরে লাশ পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হলে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতি গ্রামে বাবা আব্দুর রশিদের কবরের পাশে দাফুনের আগেই খবর ছড়িয়ে পড়ে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার পালানোর খবর শুনে পরিবারের মাঝে কিছুটা স্বস্থি ফিরে আসে এবং জানাযা নামাজে উপস্থিত মুসল্লিদের মাঝেও আনন্দ বিরাজ করে।
এদিকে অজ্ঞাত কারনে নিহতের মা হারেজা খাতুন বাদী হয়ে মামলা করতে অস্বীকৃতি জানায়। পুলিশেও হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল নির্ধারন করতে ৭ মাস সময় নিয়েছে। এসুযোগে আওয়ামী দোসররা হত্যাকান্ডটি ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টায় সেচ্ছাসেবকলীগ ও শ্রমিকলীগের দুই নেতা বাদী হয়ে আদালতে পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করে। যে অভিযোগে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসামী ছিল। পরে অভিযোগ দুইটি প্রত্যাহার করে নেয় তারা। অবশেষে ২১ মার্চ ২০২৫ তারিখে উপজেলার সিডস্টোর গ্রামে শরিফ নামে এক যুবক বাদী হয়ে শেখ হাসিনা ও উবাইদুলকাদের কে প্রধান আসামী করে এজাহার ভুক্ত ২৪৫ ও অজ্ঞাত আরো ১৫০ জনের নামে ভালুকা থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। নিহত তোফাজ্জল হোসেনের পরিবার ফ্যাসিষ্ট দোসরদের ভয়ে শ্রীপুরর নগরহাওলার ভাড়া বাসা ছেড়ে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পিজাহাতী গ্রামের বাড়ীতে চলে গিয়েছেন।
নিহতের ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন জানান,পিতার মৃত্যুর পর শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে কাশের বাড়ীতে ভাড়ায় থেকে শহীদ তোফাজ্জল হোসেন রাজমিস্ত্রির সে মোফাজ্জল হোসেন একটি দোকানে, মা হাজেরা বেগম একটি পোষাক করখানায় ও বোন বাসায় কাজ করতেন। বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেন ফ্যাসিস্ট মুক্তির সংগ্রামে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বিকালে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার একটি মিছিল যোগ দেয়। মিছিলটি সন্ধার দিকে ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌছলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মিছিলের উপর হামলা চালিয়ে তোফাজ্জলকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে মূত্যু নিঞ্চিত করে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়। খবর পেয়ে তোফাজ্জলের সহ যোদ্ধা মামুন সহ আরো কিছু মিছিলকারী আহত তোফাজ্জলকে উদ্ধার করে মাস্টারবাড়ী পপুলার ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে রাত ৯ দিকে একটি ভ্যানে করে শ্রীপুর সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষনা করেন। রাতেই লাশ শ্রীপুর থানায় হস্থান্তর করা হয়। রাত ৯টার দিকে এসআই ওয়াহিদুজ্জাম লাশের সুরতহাল রির্পোট করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। ৩৬ জুলাই বিকালে লাশ দাফুন করার জন্য গ্রামের বাড়ী নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়ার পিজাহাতী গ্রায়ে নিয়ে গেলে খবর ছড়িয়ে পড়ে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির জানান,তোফাজ্জল হত্যাকান্ডে মামলার সাবেক এমপি সহ ২১ জন আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে। প্রধান দুই আসামীর অবস্থান জেনে গ্রেফতার করতে প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সেখানে যাব। দ্রুত মামলার চার্জসীট দেয়া হবে।