পিরোজপুরে বিদ্যালয়ে শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোয় প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

এফএনএস (মোঃ রেজাউল ইসলাম শামীম; পিরোজপুর) : | প্রকাশ: ৫ আগস্ট, ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
পিরোজপুরে বিদ্যালয়ে শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোয় প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

শেখ মুজবুর রহমানের ছবি নিজ অফিস কক্ষে টাঙানোর দায়ে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার এক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  শামীমা ইয়াছমিন। 

সোমবার ৪ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ গ্রামের রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানোর বিষয় প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন নেছারাবাদ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি ছবি টাঙানোর বিষয় পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হলে ওই স্কুলে সরেজমিনে তদন্ত করে শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর সত্যতা পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে রিপোর্ট পাঠানো হয়। প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। তিনি জানান, তদন্ত চলমান, তদন্ত দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বরখাস্তও হতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াছমিনের  মোবাইলে ফোন দিলে তার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান ফোন রিসিভ করে বলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছেন একটা চিঠি আছে। অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে আমার স্ত্রীর বরখাস্ত বিষয়ে কিছুই বলেননি।

এদিকে ছবি টাঙানো ও বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই এটিকে স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বলেও মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ কেউ  ওই প্রধান শিক্ষককে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলেও আখ্যায়িত করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষক সমাজের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, অন্য একটি পক্ষ এর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে  শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙান। এ ঘটনায়  উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে ওই দিন প্রধান শিক্ষক শামীমা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার বাবা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তাই তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার বিদ্যালয়ে তাঁর এই ছবি টাঙানো ছিল। তিনি বলেন, এছাড়া বিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি সরানোর জন্য আমার কাছে সরকারি কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই আমি ছবি সরাতে যাইনি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে