ঢাকা ও দেশের অন্যান্য এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ আবারও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট, বুধবার (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৪২৮ জন রোগী।
মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন নারী। এদিকে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৩১৫ জনই ঢাকার বাইরের বাসিন্দা, যা প্রমাণ করে রাজধানীর বাইরে ডেঙ্গুর বিস্তার ক্রমেই বাড়ছে।
চলতি বছর (২০২৫) এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের, যাদের মধ্যে ৫৩ জন পুরুষ এবং ৩৯ জন নারী। আক্রান্তের সংখ্যাও কম নয়—এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৮১২ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৩৮৯ জন এবং নারী ৯ হাজার ৪২৩ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বছরের শুরু থেকেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ছিল:
জানুয়ারিতে ভর্তি হন ১,১৬১ জন, মৃত্যু ১০ জন
ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ৩৭৪, মৃত্যু ৩ জন
মার্চে আক্রান্ত ৩৩৬, তবে মৃত্যুশূন্য
এপ্রিলে আক্রান্ত ৭০১, মৃত্যু ৭
মে মাসে আক্রান্ত ১,৭৭৩, মৃত্যু ৩
জুনে আক্রান্ত ৫,৯৫১, মৃত্যু ১৯
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালকে ধরা হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ বছর, যেখানে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। পরবর্তী বছর, ২০২৪ সালে, আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪, এবং মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের।
প্রতিদিনের এই বাড়তে থাকা ডেঙ্গু পরিস্থিতি জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—বর্ষা মৌসুমে এডিস মশার প্রজনন বেশি হয়, তাই এখনই সতর্কতা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সরকারি উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং সচেতনতা বাড়ানোর কর্মসূচি থাকলেও নাগরিক পর্যায়ের অংশগ্রহণ ছাড়া এর স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। বিশেষ করে রাজধানীর বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।