খুলনা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ড্রেনের ম্যানহোলের লোহার ঢাকনা না থাকায় ফাঁকা গর্ত এখন মরণ ফাঁদ পরিনত হয়েছে। এ গুরুত্বপূর্ণ ড্রেনের উপর থেকে প্রতিদিন সাধারণ মানুষ চলাচল করে আসছে। এসব ঢাকনা গুলো রাত হলেই অতি গোপনে চোরেরা চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছে।
ফলে এসব ড্রেনের গর্তে পড়ে পথচারীদের যেকোনো মূহুর্তে ঘটতে পারে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। একারণে অতি জরুরি ম্যানহোলের ঢাকনা স্থাপন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এমনকি পুলিশের রাতের টহল থাকলেও তাদের তৎপরতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন নগরবাসী।
এ বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে প্রতিনিয়ত এভাবে ড্রেনের লোহার ঢাকনা চুরির যেমন হিড়িক পড়বে তেমনই প্রাণহানির সম্ভাবণা রয়েছে।
মহানগরীর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৫৭ খান-এ সসুব মেইল সড়কের পাশঘেঁষা ও নগরীর বিভিন্ন সড়কের ড্রেনের লোহার ঢাকনা দীর্ঘদিন যাবত ধরে একটি সিন্ডিকেট রাতের আধারে চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সুত্র থেকে ও স্বরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নগরীর বাংলাদেশ ব্যাংকস্থ বিদ্যুৎতের অফিসের পাশে, হোটেল ওয়েস্টার্ন ইন গেটের সামনে, পুলিশ লাইনের সামনে, আহসান আহমেদ মোড়ের পুলিশ স্টোরের সন্নিকটে, মির্জাপুর মোড়ের উপর, পিটি আই মোড়ের কিনারায়, চশমা মার্কেটস্থ ওয়াসার পাশে ড্রেনের ম্যানহোলের লোহার ঢাকনা গুলো চোরেরা চুরি করে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় আহাদ সুমন খান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে শহরের সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ড্রেনের লোহার ঢাকনা একটি সিন্ডিকেট রাতের আধারে চুরি করে নিচ্ছে।
সেদিন রাতের বেলা সোসাইটির মোড়ে আমার দোকানের মালামাল আনতে যায়। তখন দেখি শঙ্খ মার্কেটের গেটের সামনে চন্দ্রা স্টোরের অপর সাইডে একটি ইজিবাইক দাড়িয়ে রয়েছে। আমাকে দেখে ওরা মুখ লোকালো। মালামাল নিয়ে ড্রেনের উপর থেকে আসার পথে হঠাৎ পা দিয়ে দেখি ঢাকনা নেই। বিষয়টি ক্লিয়ার হওয়ার জন্য এডিটা হোটেলের সিসি ক্যামেরায় দেখি ইজিবাইক ওয়ালা ঢাকনা রূপসার দিকে চলে গেলো। তবে এই ঢাকনা না থাকলে ড্রেনে পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙবে, পথচারীদের মোবাইল ছিটকে পড়ে যাবে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিষয়টি সুনজরে আনার জন্য পুলিশ-প্রাশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নজরে আনার দাবি জানাচ্ছি।
পত্রিকা বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, নগরীতে ফুটপাতের ড্রেনের ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হওয়ার কারনে যেকোনো মূহুর্তে পথচারীদের ওই গর্তে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে অনুরোধ করবো এই ম্যানহোলের ঢাকনা যাতে আর চুরি না হয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
পথচারী নজরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এদের চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে। এই ড্রেনের উপর দিয়ে চলাচলের মুহুর্তে যেকোনো ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এই ড্রেনের ঢাকনা যাতে চুরি না হয় সেই সু-ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শরীফ আসিফ রহমান বলেন, আমি হাটাহাটি করার মুহুর্তে দেখেছি ড্রেনের অনেক যায়গায় ম্যানহোলের লোহার ঢাকনা নেই। এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশকে অবহিত করেছি। তবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনর্স্থাপনা করবো।
খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস) মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম খান বলেন, ড্রেনের ম্যানহোলের এমন একটি ডিজাইন করতে হবে যা মানুষ আর চুরি করতে পারবে না। এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার সাহেবকে বলেছি।