শহিদুল আলমকে ‘আইসিটি মামলায়’ নির্দোষ ঘোষণা হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম | প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:২৩ পিএম
শহিদুল আলমকে ‘আইসিটি মামলায়’  নির্দোষ ঘোষণা হাইকোর্টের

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক আন্দোলনের সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা আলোচিত মামলায় আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, মামলাটি অবৈধ এবং তা বাতিলযোগ্য। দীর্ঘ সাত বছরের আইনি লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট), আদালতের এই সিদ্ধান্তে শেষ হলো এক পর্ব।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শহিদুল আলমের কিছু মন্তব্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া পোস্টকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই বছরের ৫ আগস্ট রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডির নিজ বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরদিন ৬ আগস্ট রমনা থানায় মামলাটি রুজু হয় এবং তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ১১ সেপ্টেম্বর জামিন আবেদন খারিজ করলে, তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। 

হাইকোর্ট ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর শহিদুল আলমকে জামিন দেন এবং প্রায় সাড়ে তিন মাস কারাগারে থাকার পর তিনি ২১ নভেম্বর মুক্তি পান।

মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। পরবর্তীতে শহিদুল আলম হাইকোর্টে মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং রুল জারি করেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালেদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটিকে অবৈধ ঘোষণা করে বাতিলের রায় দেন।

আদালতে শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল নোমান, কাজী জাহেদ ইকবাল, প্রিয়া আহসান চৌধুরী ও মনিয়া হক মনি।

২০১৮ সালে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ ছিল, শহিদুল আলম তার ফেসবুক টাইমলাইনে এবং বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী, কল্পনাপ্রসূত ও উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়েছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি জনমনে ভীতি সঞ্চার এবং সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন।

তবে আদালতের পর্যবেক্ষণে এসব অভিযোগ টেকসই প্রমাণিত হয়নি বলেই মামলাটি বাতিল করা হয়। এই রায়ের ফলে একটি বহুল আলোচিত মামলার অবসান ঘটল, যা নাগরিক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের প্রশ্নে দেশে-বিদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে