দেশের বাজার ব্যবস্থাপনায় সিন্ডিকেট নির্মূলের পর এবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে সরকার। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুর্নীতি নির্মূলের অঙ্গীকার করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টার ভাষ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, "বাজার ব্যবস্থাপনায় সিন্ডিকেটকে নির্মূল করতে পেরেছি। নির্বাচনের আগেই দুর্নীতিও দূর করব। সেইসঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জ্বালানি সংকট কাটিয়ে উঠতেও কাজ করছি।"
শেখ বশিরউদ্দীন জানান, সরকার এমন এক অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনের চেষ্টা করছে যেখানে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘদিনের জ্বালানি সংকটেও দৃশ্যমান অগ্রগতি আসবে।
এদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সপ্রবাহও ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (৬ আগস্ট) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০,০৭৭ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২৫,০৫৭ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়া আগস্ট মাসের প্রথম পাঁচ দিনেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসেবে যার অর্থমূল্য প্রায় ৪ হাজার ১ কোটি টাকা। এ প্রবাহ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এই বৃদ্ধি প্রবাসীদের আস্থার প্রতিফলন।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার—যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
সরকারের দাবি অনুযায়ী, বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিকতা এবং রিজার্ভে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নির্বাচনের আগে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে নেওয়া উদ্যোগের সফলতা প্রমাণ করছে। দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির এই যুগপৎ প্রয়াসে দেশের নাগরিকদের প্রত্যাশা আরও বেড়ে গেছে।