গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নোয়াবের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট: ৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম | প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:৩৭ পিএম
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নোয়াবের উদ্বেগ

দেশজুড়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতা ও গণমাধ্যমে সৃষ্ট চাপা আতঙ্ক নিয়ে কঠোর ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নোয়াব জানায়, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ একটি অবাধ, ন্যায্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রত্যাশা করেছিল। সেই প্রেক্ষাপটে মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছিল স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দুতে। কিন্তু বাস্তবতা হয়ে উঠেছে হতাশাজনক। বিগত এক বছরে সংবাদমাধ্যমে হস্তক্ষেপ, সাংবাদিকদের হয়রানি এবং সম্পাদকদের অপসারণের ঘটনা সে স্বপ্নকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

নোয়াব জানায়, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় সম্প্রতি যে ‘মব’ তৈরি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে, তা শুধু দুঃখজনক নয়, ভয়ানক নজিরও বটে। বিবৃতিতে বলা হয়, যদি কোনো কর্মীর বকেয়া বা পাওনা থাকে, তা নিরসনের যথাযথ পথ শ্রম আদালত। আর যদি কোনো সংবাদবিষয়ক বিরোধ থাকে, সেটি প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে মীমাংসার বিষয়। অথচ এসব আইনি প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে সরাসরি পত্রিকা কার্যালয় ঘেরাও করা হয়েছে—যা সংবাদপত্রের মালিক পক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য এক বড় হুমকি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে নোয়াব জানায়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে মোট ৪৯৬ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৬৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনায়। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন সাংবাদিক। চাকরি হারিয়েছেন অন্তত ২৪ জন গণমাধ্যমকর্মী। বরখাস্ত করা হয়েছে আটটি পত্রিকার সম্পাদক ও ১১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তা প্রধানকে।

এই বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে নোয়াব বলছে, গণমাধ্যমে ভয়ভীতির পরিবেশ এবং অনিরাপত্তা বিরাজ করলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই সংগঠনটির দাবি, অবিলম্বে সরকারকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় কার্যকর ও সাহসী উদ্যোগ নিতে হবে। ‘মব’ তৈরি করে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্তৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগের অপসংস্কৃতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে।

নোয়াবের মতে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি তখনই সুদৃঢ় হবে, যখন তথ্যপ্রকাশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা পাবে এবং সাংবাদিকেরা নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে