পাথরঘাটা পৌর এলাকায় সাপ্লাই পানির সংকট: বিল আছে, পানি নেই!

এফএনএস (পাথরঘাটা, বরগুনা) : | প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
পাথরঘাটা পৌর এলাকায় সাপ্লাই পানির সংকট: বিল আছে, পানি নেই!

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পশ্চিমে বলেশ্বর নদী, পূর্বে বিষখালী নদী এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। চারদিকে পানি থৈ থৈ করলেও এখানকার মানুষের ভাগ্যে নেই এক ফোঁটা বিশুদ্ধ পানি। গত ছয় মাস ধরে পাথরঘাটা পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা চরম পানির সংকটে দিন পার করছেন।

পাথরঘাটা পৌরসভার ছয়টি সাপ্লাই পাম্পের মধ্যে চারটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে আছে। ফলে বেশিরভাগ এলাকায় পানির সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ। মাসের পর মাস পানি না পেলেও পৌরবাসীকে নিয়মিত গুনতে হচ্ছে পানির বিল এ যেন ‘জলবিহীন বিল-নিপীড়ন’ বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয়রা।

পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাপ্লাই পানির ইউনিট রেট অন্যান্য পৌর এলাকার তুলনায় বেশি নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন, পানি না দিয়ে বিল নেওয়া বেআইনি ও জনবিরোধী সিদ্ধান্ত।

পাথরঘাটা পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা খলিল পাহলান জানান, আমার এলাকায় দেড় বছর ধরে এক ফোঁটা পানিও পাইনি, অথচপ্রতি মাসে বিলের কাগজ ঠিকই বাড়িতে পৌঁছে যায়। খাওয়ার পানি অনেক দূর থেকে কিনে আনতে হচ্ছে, গোসল তো অনেকটাই বিলাসিতা হয়ে গেছে।

সাগর ও নদীর পানির উচ্চমাত্রার লবণাক্ততার কারণে তা ব্যবহারের অনুপযোগী। ফলে পৌরসভার মানুষ সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল সাপ্লাই পানির ওপর। কিন্তু সেই পানির সরবরাহই এখন অচল।

এই সংকট মোকাবেলায় বহুবার মানববন্ধন ও পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচি করেছেন স্থানীয়রা। আশ্বাস মিললেও বাস্তবে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পৌরবাসীর।

পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ নজমুল হক সেলিম জানান, পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই আজ এই সংকট।নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পাম্পগুলো বিকল হয়ে আছে।

এদিকে পৌরবাসীর তোপের মুখে দায়িত্বশীলরা আশ্বাস দিলে ও সমাধান এখনো অনিশ্চিত।

পাথরঘাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মজিবুল হায়দার জানান, কয়েকটি ওয়ার্ড উঁচু হওয়ায় সেসব জায়গায় সাপ্লাই পানি সরবরাহ করতে সমস্যা হয়। তবে সমস্যা সমাধানে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

পাথরঘাটা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান জানান, পানি সরবরাহ না করতে পারায় আমরা দুঃখিত। যেসব এলাকায় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি, সেসব জায়গার বাসিন্দাদের বিল কমিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে