ভালো নির্বাচন করার জন্য কৌশলে যা যা করা দরকার তা করা হবে: প্রধান নির্বাচন কমিশনার

এফএনএস (মমিনুল ইসলাম রিপন; রংপুর) : | প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:৪৩ পিএম
ভালো নির্বাচন করার জন্য কৌশলে যা যা করা দরকার তা করা হবে: প্রধান নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এন নাসির উদ্দিন বলেছেন,  অস্ত্রের চেয়ে এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে এআই এর ব্যবহার। এআই হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার। এটা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না। সাংবাদিকরা আমাদের পক্ষ। যারা প্রফেশনাল সাংবাদিক তারা আমাদের হয়ে কাজ করবেন, সচ্ছ ইলেকশনের জন্য কাজ করবে এই প্রত্যাশা আমাদের আছে। কিন্তু যারা ফেসবুক দিয়ে সাংবাদিকতা করে, যাদের কোন ট্রেনিং নাই, কোন দক্ষতা নেই। কোন এথিকস নাই। তাদের নিয়ে আমাদের সমস্যা। কেননা তারা প্রধান উপদেষ্টা ও আমাকে নিয়ে নানা ধরণের ভিডিও বানিয়ে একটা লিখে দিয়ে ছেড়ে দেয়। অনেক মানুষ এসব বোঝে না। রাতে শুয়ে শুয়ে এসব ভিডিও দেখে। এগুলো কেউ যাচাই বাছাই করে না। আটিফিসিয়াল ভিডিও দেখে আর আমাদের ভুল বোঝে। তাই সবার কাছে অনুরোধ এগুলো যাছাই বাছাই ছাড়া কেউ শেয়ার করবেন না। এই বিষয়ে সাংবাদিক ভাইয়ের সহযোগিতা দরকার। কেননা এটা আমাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব বন্ধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমাদের পক্ষ থেকে আমরা নিচ্ছি। 

শনিবার (৮ আগস্ট) সকালে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রংপুর অঞ্চল ও রংপুর অঞ্চলের সকল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাথে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেছেন। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন সিস্টেমের প্রতি, নির্বাচন কমিশনের প্রতি এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসন মিলে যে একটা ভালো নির্বাচন করা সম্ভব এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব এই বিষয়ে আমরা কাজ করছি। তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করাটাই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনের হুঁশ থাকা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম একেবারেই সোজা থাকবে বিধিবিধান বা আইন কানুন ছাড়া এটা বাঁকা হবে না। 

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। আরো উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আমরা চাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো উন্নত হউক। যাতে করে শান্তিপূর্ণ ও নির্ভয়ে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে। মানুষে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ভুলে গেছে। তারা নির্বাচনের দিন অনেক মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে যায় না, বাসায় আরাম আয়েস করে। অনেকেই মনে করে, ভোট দিতে গিয়ে কি হবে। কেউ না কেউ তো আমার ভোটটা দিয়ে দিবে। এই রকম মানসিকতা তৈরী হয়েছে। এই মানসিকতা দূর করাই নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। এজন্য সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সচেতনতা তৈরীতে সাংবাদিকদের ভুমিকা রয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাই। পরামর্শ চাই। 

এ এম এন নাসির উদ্দিন বলেন, অতিতে যে সব প্রিজাইডিং এবং প্রশাসনের লোকজন নির্বাচনের নেতিবাচক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলো তাদেরকে আগামী নির্বাচনে না রাখার চেষ্টা চলছে। তবে আমরা তো বিদেশ থেকে লোক আমদানি করে নির্বাচন করতে পারবো না। এইসব লোকদের এদিক সেদিক করে নির্বাচন করতেই হবে। তবে ভালো নির্বাচন করার জন্য কৌশলে যা যা করা দরকার তা করা হবে। তবে এদেশে ৯১ ও ৯৬ তে ভালো নির্বাচন হয়েছে এই দেশের মানুষ দিয়েই। তাই এ দেশের মানুষের প্রতি আস্থাও রাখতে চাই। কেননা তাদের কে যদি আমরা বিশ্বাস করাতে পারি, সত্যিকার অর্থে আমরা একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে কাজ করছি, আশা করছি তারা আমাদের বিশ্বাসটা রাখবে নিজেদের মধ্যে। 

উল্লেখ্য: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রংপুরের মাঠ প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কমকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে তিন দিনের জন্য রংপুর আসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে