বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ বা ‘শূন্য রিটার্ন’ দাখিলের ভুল ধারণা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রোববার (১০ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল এবং বেআইনি ঘোষণা করেছে। আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের সুযোগ নেই এবং করদাতাদের প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সঠিকভাবে রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে।
এনবিআর স্পষ্ট জানিয়েছে, আয়কর রিটার্নে মিথ্যা তথ্য বা শূন্য তথ্য প্রদানের মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল করা ফৌজদারি অপরাধ। এর জন্য করদাতাদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শূন্য রিটার্ন দাখিলের বিষয়ে প্রচারিত ভ্রান্ত তথ্যের বিষয়ে করদাতাদের বিশেষ সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়, যেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয় ও সম্পদের সঠিক তথ্য উল্লেখ আবশ্যক। করদাতাদের প্রকৃত আয় যদি করযোগ্য না হয়, তবুও তা সঠিকভাবে রিটার্নে উল্লেখ করতে হবে, যাতে কোনোরূপ অসত্য বা অসঙ্গতি না থাকে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান শনিবার (৯ আগস্ট) আইসিএমএবির এক অনুষ্ঠানে এই বিষয়টি নিয়ে বলেন, ‘আয়কর আইনে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো বিধান নেই। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং আইন অনুসারে মিথ্যা রিটার্ন দাখিলের জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।‘
বর্তমানে দেশের প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী রয়েছে, যাদের মধ্যে বছরে প্রায় ৪০ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন। গত অর্থবছরে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলকারী ১৭ লাখের অধিক করদাতার মধ্যে ৭০ শতাংশ করদাতা কর পরিশোধ না করলেও রিটার্ন দিয়েছেন।
এনবিআর সতর্ক করে দিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিলের অপপ্রচার থেকে বিরত থেকে করদাতারা সঠিক তথ্য প্রদান করুক, যাতে তারা আইনগত জটিলতা ও কারাদণ্ড থেকে বাঁচতে পারেন। এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।