এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেশে ক্রমেই উদ্বেগজনক আকার নিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১ জনে। রোববার (১০ আগস্ট) হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক দিনে সারা দেশে নতুন করে ৪৪৮ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮১ জন, ঢাকা বিভাগে ৮৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৩৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ৫৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৪ জন, রংপুর বিভাগে ৭ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছরে মৃতদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। এদের মধ্যে বরিশালে ১৮ জন, চট্টগ্রামে ১৭ জন, খুলনায় ৪ জন, ময়মনসিংহে ১ জন ও রাজশাহীতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে—যারা সবাই বিভাগীয় সিটির বাইরে বসবাস করতেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের, উত্তর সিটি করপোরেশনে ১১ জনের এবং সিটি করপোরেশনের বাইরের এলাকায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
মাসভিত্তিক পরিসংখ্যানে জানুয়ারি মাসে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ৩ জন, জুনে ১৯ জন ও জুলাই মাসে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। চলতি আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৪০৪ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে ২২ হাজার ৭০৮ জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন। সব মিলিয়ে এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪ হাজার ১৪৩ জন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ায় নগর ও গ্রামীণ এলাকায় একযোগে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি। বিশেষ করে সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।