এক গার্মেন্টের ঋণ ৪৮ হাজার কোটি, টাকার হদিস নেই: সাখাওয়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম
এক গার্মেন্টের ঋণ ৪৮ হাজার কোটি, টাকার হদিস নেই: সাখাওয়াত

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের ব্যাংক খাত ও অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার নানা চিত্র উঠে আসছে প্রকাশ্যে। শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছেন, মাত্র একটি গার্মেন্ট কোম্পানি ১৬টি ব্যাংক ও ৭টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৪৮ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা নিয়েছে, যার কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব মেলেনি।

রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন। সাখাওয়াত বলেন, “জনতা ব্যাংক থেকেই প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। কীভাবে এই অর্থায়ন হয়েছে, তার সদুত্তর আজও মেলেনি।”

তিনি মনে করেন, ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার কারণেই এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। “বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তা পলাতক। কোথাও শুনেছেন স্টেট ব্যাংকের গভর্নর পালিয়ে যায়?”— প্রশ্ন তোলেন শ্রম উপদেষ্টা।

সাখাওয়াত বলেন, “যখন আমরা দায়িত্ব নিই, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাঠামো ভেঙে পড়েছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল নাজুক। থানায় আগুন দেওয়ার ঘটনার পর পুলিশও কাজে ফিরতে অনাগ্রহী ছিল। এ অবস্থার মধ্যেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি জানান, ব্যর্থ মালিকদের কারণে বহু শ্রমিক বেতন পাননি। “কিছু মালিকের বাড়ি ও জমির দলিল এখন আমাদের মন্ত্রণালয়ের হাতে আছে। বিক্রির জন্য প্রস্তুত, দুই-চার দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু হবে। কারণ শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছিল, যা ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের সময় শ্রমিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখন সবাই খোলাখুলি কথা বলতে পারছে, কাউকে গুম বা খুন করা হচ্ছে না। আমরা আসার আগে ৪২ জন শ্রমিক নেতা জেলে ছিলেন, এখন মাত্র একজন আছেন।”

তবে সমালোচনা নিয়েও আক্ষেপ প্রকাশ করেন শ্রম উপদেষ্টা। “গালি খাচ্ছি, ইউটিউবে যা খুশি বলা হচ্ছে, কিন্তু আমরা চুপচাপ সহ্য করছি। যদি ব্যর্থতা হয়ে থাকে, সেটা শুধু আমার নয়— আপনাদেরও,” বলেন তিনি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে