ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ল

রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিয়ে চলমান আলোচনায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সোমবার (১১ আগস্ট) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, কমিশনের কার্যকাল আগামী সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সরকার গত সোমবারের এ সিদ্ধান্তের ফলে কমিশন তার তৃতীয় ধাপের সংলাপ আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে পারবে। কমিশন ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণ ও ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর করার বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে বৈঠক হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয় ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে সহসভাপতি করে। সাত সদস্যের এই কমিশনে আরও আছেন—জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

গঠনকাল থেকে কমিশনের মূল দায়িত্ব ছিল দেশের ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও গ্রহণের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা। প্রথম ছয় মাসের মেয়াদ ছিল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) পর্যন্ত, যার মধ্যে দুই দফা সংলাপে তারা ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টি বিষয়ে এবং সাংবিধানিক সংস্কারসংক্রান্ত ২০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।

কমিশনের সদস্যরা মনে করছেন, অতিরিক্ত এক মাস সময় পাওয়া তাদের জন্য সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা ও রাজনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সময়সীমা বৃদ্ধি কেবল আলোচনাকে দীর্ঘায়িত করবে না, বরং আসন্ন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বাস্তবসম্মত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করতে পারে।