সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে রায় ২ সেপ্টেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৩ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে রায় ২ সেপ্টেম্বর

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির দিকে দেশ এগোচ্ছে। হাইকোর্ট আগামী সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) এই বিষয়ে রায় ঘোষণা করবেন।

বুধবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং ইন্টারভেনর হিসেবে যুক্ত ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।

বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, অধস্তন আদালতে দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ, পদোন্নতি, বদলি, ছুটি মঞ্জুর ও শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে, যা তিনি সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োগ করেন। কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এই ক্ষমতা ছিল সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে।

রিটকারী আইনজীবীদের দাবি—এই পরিবর্তনের ফলে নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে, যা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার পথে বড় বাধা। এ কারণেই মূল ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশনা এবং ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়।

গত বছরের ২৫ আগস্ট ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট শিশির মনির হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। একই দিনে অপর একটি দলও রিট দায়ের করে, যাতে বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ওই বছরের ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান—বর্তমান ১১৬ অনুচ্ছেদ ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।

প্রথমে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের ২৫ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগে পদোন্নতি পাওয়ায় বেঞ্চটি ভেঙে যায়। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি আহমেদ সোহেল।

এই বেঞ্চে ২৩ এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে শুনানি শুরু হয়, যা কয়েক দফায় স্থগিত হওয়ার পর ১৩ আগস্ট চূড়ান্তভাবে শেষ হয়। আদালত এরপর ২ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন।

আইনজীবী মহল ও বিচার বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় দেশের বিচার বিভাগের কাঠামো ও স্বাধীনতা নিয়ে ভবিষ্যতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে