সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর এলাকায় পাথর উত্তোলন ও অবাধ লুটপাটের ঘটনা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর একেএম নূরুন নবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন।
রিটে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এতে স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবেশ সচিব, আইজিপি, সিলেটের জেলা প্রশাসক, কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। জনস্বার্থে দায়ের করা এই রিটে হাইকোর্টকে অনুরোধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদারকির মাধ্যমে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিতে, যাতে ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর উত্তোলন এবং লুটপাট রোধ করা সম্ভব হয়।
হাইকোর্ট রিটের শুনানি আগামী রোববার (১৭ আগস্ট) দ্বৈত বেঞ্চের মাধ্যমে সম্পন্ন করার দিন ধার্য করেছেন। বিচারপতি ফাহমিদা ক্বাদরি ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর এই বেঞ্চের নেতৃত্ব দেবেন।
স্থানীয়রা জানান, আগে রাতের আঁধারে মাঝেমধ্যেই পাথর চুরি হলেও বর্তমানে দিনের বেলায় কয়েক কোটি টাকার সাদা পাথর চুরি হচ্ছে। প্রশাসনের উপস্থিতি থাকলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতা ও কিছু ক্ষেত্রে মদতে এই লুটপাট চলছে। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সাদা পাথর লুটপাট শুরু হলেও প্রশাসনের উদ্যোগে তা কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু সুযোগ বুঝে লুটপাট এখনও অব্যাহত। ধলাই নদীতে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালানো হলেও, এক সপ্তাহে শুধুমাত্র একদিন অভিযান হয়; বাকি ছয়দিন চলতে থাকে অবাধ লুটপাট। এছাড়াও পাথর কেনাবেচার স্থানগুলোতে অভিযান না হওয়ায় এই অনিয়ম বন্ধ হচ্ছে না।
দূর্গম পর্যটন এলাকায় সাদা পাথরের অবাধ লুটপাট ও প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের রিট শুনানি আগামী রোববার এলাকা ও দেশের পর্যটন সম্পদ সংরক্ষণের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।