বিপাকে আক্রান্তরা

অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন নেই

এফএনএস (মল্লিক খলিলুর রহমান; অভয়নগর, যশোর) : | প্রকাশ: ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন নেই

যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে জলাতঙ্ক (র‌্যাবিস ভ্যাকসিন) রোগের টিকা পাওয়া যাচ্ছেনা। শনিবার (৯ আগস্ট) মজুদ শেষ হওয়ায় টিকাদান বন্ধ রাখা হয়েছে। চড়া মূল্যে ফার্মেসি থেকে টিকা ও সিরিঞ্জ কিনতে হচ্ছে ভুক্তভুগি রোগীদের। যে কারণে বিপাকে পড়ছেন আক্রান্ত অনেকেই। 

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলেন, জলাতঙ্ক রোগের টিকা বা ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হওয়ার আগেই সরবরাহ করা প্রয়োজন ছিল। পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ এই মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

সরেজমিনে গতকাল বৃহস্প্রতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, কুকুর ও বিড়ালের কামড়-হাচড়ে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী জরুরী বিভাগে বসে রয়েছেন। টিকা না থাকায় দুশ্চিস্তায় রয়েছেন তারা। দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীর টেবিলে নোটিশ লেখা রয়েছে, জলাতঙ্ক (র‌্যাবিস ভ্যাকসিন) রোগের টিকা সরবরাহ সাময়িক বন্ধ থাকায় দুঃখিত। আক্রান্ত রোগীদের নিজ দায়িত্বে টিকা কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই নোটিশ দেখিয়ে বাইরে থেকে টিকা কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এজন্য চারজন রোগীকে একত্রিত হয়ে এক ভাওয়েল ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে। অনেকের কাছে টাকা না থাকায় টিকা না দিয়ে ফির যাচ্ছেন বাসায়।

কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত উপজেলার ধোপাদী গ্রামের ৭ বছর বয়সী সোহানের পিতা মেহেদী ইসলাম বলেন, বাড়ির সামনে খেলা করার সময় ছেলেকে কুকুর আক্রমন করে। দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জানতে পারি (ভ্যাকসিন) টিকা শেষ হয়ে গেছে। আরো ৩ জন রোগীর অপেক্ষায় জরুরী বিভাগে বসে আছি।

নওয়াপাড়া গুয়াখোলা গ্রামের মীর আলী সর্দার (৬০) বলেন, বাড়ির পোষা বিড়াল কামড় ও হাচড় দিয়েছে। ভ্যাকসিন নিতে এসে শুনি শেষ হয়ে গেছে। এক ঘন্টা অপেক্ষার পর ৪ জন রোগী হয়েছে। হাসপাতালের সামনে একটি ফার্মেসি থেকে ৪৫০ টাকায় এক ভাওয়েল টিকা কিনেছি। এছাড়া ৪টি সিরিঞ্জও কিনতে হয়েছে। ৪ জন রোগীকে প্রথম ডোজ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। অস্বচ্ছল পরিবারের জন্য এই টিকা ও সিরিঞ্জ কেনা কষ্টের ব্যাপার। দুঃখের বিষয় সরকারি হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা নেই।

 উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজিব বলেন, ‘২০২৪/২৫ অর্থ বছরের এপ্রিল মাসে উপজেলা পরিষদ থেকে ৬৪০ ভাওয়েল (পিস) ভ্যাকসিন পেয়েছিলাম। এক ভাওয়েল ভেঙে ৪ জন রোগীকে দেওয়া হয়। একজন রোগীকে তিনবার টিকা দিতে হয়। প্রতিধিন ৭/৮ ভাওয়েল ভ্যাকসিন প্রায়োজন হয়। ভ্যাকসিন শেষ হওয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগীরা বাহির থেকে কিনছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’   

এ বিষয় অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল বলেন, জলাতঙ্কের টিকা/ র‌্যাবিস ভ্যাকসিন শেষ হওয়ার খবর পেয়েছি। নতুন করে ভ্যাকসিন(টিকা) কেনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে