রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিখর গ্রামে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি হত্যা মামলা, অন্যটি অপমৃত্যুর মামলা। শুক্রবার রাতে নগরীর মতিহার থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে বাড়ির দুটি ঘরে মিনারুল ইসলাম (৩০), তাঁর স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৩)। একটি ঘরের বিছানায় ছিল মনিরা ও শিশুকন্যা মিথিলার লাশ। পাশের ঘরের বিছানায় ছিল মাহিমের লাশ।
এ ঘরেই ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় মিনারুলের লাশ ঝুলছিল। ঘর থেকে দুই পাতার একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। এটি মিনারুল লিখে গিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এ কারণে যে, আমি একা যদি মরে যাই, তাহলে আমার বউ, ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভাল হলো।’
এতে আরও লেখা আছে, ‘আমি মিনারুল প্রথমে আমার বউকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিনকে মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।’
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক জানান, মিনারুলের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা রুস্তম আলী বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। আর মনিরা, মাহিম ও মিথিলাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন মনিরার মা শিউলী বেগম। মামলা দুটিতে আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। আসামি অজ্ঞাত। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। শুক্রবার লাশ চারটি উদ্ধারের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।