কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে প্রতিদিনই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের দুই ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বন্ধ হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। শনিবার দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃআব্দুল হাই সিদ্দিকী জেলা প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দকৃত দৌলতপুরে বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ২০ মেট্রিক টন চাউলের মধ্যে চিলমারী ইউনিয়নে ১০ মেট্রিক টন চাউল চিলমারী ইউনিয়নের তেমাদিয়া,মানিকেরচর,খা পাড়া,মনসুর বাজার এলাকার বন্যা কবলিত দের মাঝে দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে শুকনো খাবার স্যালাইন সহ ওষুধ সামগ্রী শনিবার দিনব্যাপী বিতরণ করেছেন।যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলভার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, চিল্বার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, সেক্রেটারি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা মেহের শিকদার,চিলমারী ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রহিম শিকদার, রুপালি খাতুন, শাহিনুর ইসলাম,রফিকুল ইসলাম, ফজলুল হক ও শহিদুল ইসলাম। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, পদ্মার পানি বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার নীচে অবস্থান করেছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী দুই একদিনের মধ্যেই বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের ধারণা। ভারী বৃষ্টিপাত ও ফারাক্কার বিরুপ প্রভাবে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে পদ্মায় পানি বাড়ছে। গত ১০দিনে অব্যাহতভাবে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিদিনই। দৌলতপুরের মুল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বন্যাকবলিত চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ২০ হাজার হেক্টর জমির মরিচ, সবজি, কলা, ভুট্টা, ধান সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষকরা। চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, চিলমারী ইউনিয়ন মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের গ্রামগুলোর অধিকাংশ মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়বে। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৩টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে যাতে বন্যাকবলিত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। দৌলতপুর উপজেলা চিলমারীর চরাঞ্চলের ১০ হাজার হেক্টর জমির মরিচ, রোপা আউশ, কলা, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ভুট্টা বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। নিচু এলাকার বাড়ি গুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, পদ্মা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া, শুকনো খাবারসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি রয়েছে। এদিকে চিলমারিতে পদ্মা নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে বলে চিলমারীর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান শনিবার রাতে জানান।