রাজনীতিতে আলোচিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে মতভেদ তৈরি হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, খসড়ায় কিছু অসামঞ্জস্যতা রয়েছে। রোববার (১৭ আগস্ট) চ্যানেল ২৪–কে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আনুষ্ঠানিক মতামত জানানো হবে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন খসড়াটি ৩০ রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পাঠিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, আগামী বুধবার (২০ আগস্ট) পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া যাবে।
খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, সংবিধান ও অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য পাবে জুলাই সনদের বিধানসমূহ। এমনকি এর বৈধতা বা কার্যকারিতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। প্রস্তাব অনুযায়ী, সংবিধান সংশোধন, নতুন আইন প্রণয়ন ও প্রশাসনিক কাঠামোয় বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন ব্যবস্থা এবং পুলিশি কাঠামোতেও পরিবর্তনের সুপারিশ রাখা হয়েছে।
সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে। ওই সময় প্রাণ হারানোদের শহিদ ঘোষণা, তাদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় সহায়তা এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা থাকবে। এছাড়া যেসব প্রস্তাব অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, তা পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
সনদের ব্যাখ্যা-সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্নের চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের হাতে থাকবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দল সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। তাদের ভাষ্য, শুধু রাজনৈতিক অঙ্গীকার নয়, এটি যেন আইনগত বলবৎ শক্তি পায়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত পাওয়ার পর বাস্তবায়নের ধরন ও অগ্রাধিকার চূড়ান্ত হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল। তবে আমরা চূড়ান্ত খসড়ায় কিছু অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করেছি। এগুলো নিয়ে স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করে তারপরই বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে মত দেবে।”